একসময় বর্ষাকালে ঘোরাঘুরি এড়িয়ে চলাই হতো স্বাভাবিক, কিন্তু এখন অনেকেই মনে করেন—নিসর্গের শ্রেষ্ঠ রূপ ধরা পড়ে এই মৌসুমেই। যারা প্রকৃতির কোল ঘেঁষে নিরিবিলি ভ্রমণ পছন্দ করেন, তাদের জন্য বর্ষা হয়ে উঠতে পারে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতার সময়। চলুন, জেনে নিই এমন পাঁচটি গন্তব্য, যা বর্ষায় আপনাকে মোহিত করবে।
১. অফসিজনে সৈকতের নির্জনতা:
বর্ষার সময় কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় পর্যটক কম থাকায় সৈকত হয়ে ওঠে আরও শান্ত ও নির্জন। যারা কোলাহল এড়িয়ে প্রকৃতিকে আপন করে নিতে চান, তাদের জন্য এই সময়টা একেবারে উপযুক্ত। হোটেল-রিসোর্টগুলোতে থাকে আকর্ষণীয় ছাড়ও।
২. বনের রহস্যময় রূপ:
বর্ষার রাতে বনের নিস্তব্ধতা, ব্যাঙের ডাকে ঘুমিয়ে পড়া কিংবা চাঁদের আলোয় ভেজা গাছের পাতা—এই অভিজ্ঞতা নিতে পারেন কালেঙ্গা, রেমা, সাতছড়ি, সাঙ্গু-মাতামুহুরী, হাজারীখিল বা পাবলাখালী অভয়ারণ্যে। তবে পোকামাকড় ও সাপের কারণে বাড়তি সতর্কতা দরকার।
৩. হাওরের হাউসবোট ও হইচই:
বর্ষা মানেই হাওরের জলজ জাগরণ। সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর এখন বিলাসবহুল হাউসবোটের জন্যও বিখ্যাত। শহরের সাহেববাড়ি ঘাট বা তাহিরপুরের নামাবাজার ঘাট থেকে শুরু করে ঘোরাঘুরির ব্যবস্থা বেশ উন্নত। চাইলে আগেই নৌকা ভাড়া ঠিক করে নিতে পারেন।
৪. জলপ্রপাতের ঝর্ণাধারা:
বর্ষায় পাহাড়ি জলপ্রপাতগুলো হয়ে ওঠে আরও উচ্ছল। বান্দরবানের নাফাখুম, জাদিপাই, খাগড়াছড়ির ধুপপানি কিংবা সিলেটের হামহামের মতো প্রাকৃতিক জলধারাগুলো এই সময় দেখা সবচেয়ে আকর্ষণীয়।
৫. বরিশালের ভাসমান হাট:
বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুরে বর্ষায় নদীখাল জেগে ওঠে। এই সময়ের বিশেষ আকর্ষণ ঝালকাঠির ভাসমান পেয়ারার হাট। ট্রলার বা ডিঙিনৌকা করে হাটে হাটে ঘোরা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। মধ্য আগস্টে হাট পুরোপুরি জমে ওঠে, তখন ভ্রমণের মজাও দ্বিগুণ।
বর্ষার এই রূপগুলো কেবল চোখে দেখলেই বোঝা যায়—প্রকৃতি কতটা রঙিন, রোমাঞ্চকর ও প্রশান্তিময় হতে পারে। বর্ষায় ভ্রমণ তাই হয়ে উঠতে পারে এক ভিন্নধর্মী আনন্দময় অভিজ্ঞতা।
