২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জমি ও ফ্ল্যাট কেনায় কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা হওয়ায় তীব্র সমালোচনা করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, এই সুবিধা সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করবে এবং নৈতিকতার ওপর সরাসরি আঘাত হানবে।
আজ ৩ জুন রাজধানীর লা ভিটা হোটেলে সিপিডির বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বৈষম্য বাড়ায়। আবাসন খাতে এর প্রভাবে দাম বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জন্য তা আরও দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে। এই প্রবণতা সমতা ও ন্যায়ের ধারণার পরিপন্থী।”
ফাহমিদা খাতুন জানান, এবারের বাজেটে কিছু ইতিবাচক দিক থাকলেও সামগ্রিক অর্থনৈতিক সংকট যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আরও বেশি চাপে পড়বেন।
তিনি আরও বলেন, বাজেটে রাজস্ব আয়ের কাঠামো বৈষম্যমূলক। ছয়টি শ্রেণিভিত্তিক কর কাঠামোতে নিম্ন আয়ের মানুষ তুলনামূলকভাবে বেশি করের আওতায় পড়বেন, যেখানে উচ্চ আয়ের ব্যক্তিরা তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন।
উন্নয়ন বাজেট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সিপিডির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে উন্নয়ন ব্যয় কমানো হয়েছে, যা সমাজের জন্য দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সংখ্যা ১৪০ থেকে কমিয়ে ৯৫ করায় অনুপাতিক বরাদ্দ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
তবে বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উন্নীত করায় তা স্বাগত জানিয়েছে সিপিডি। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগকেও প্রশংসা করা হয়।
সব মিলিয়ে, সিপিডি মনে করে বাজেটে ঘাটতির আড়ালে কিছু কাঠামোগত অসামঞ্জস্য রয়ে গেছে। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৮.৯ শতাংশ ধরা হলেও তার বাস্তবায়ন সহজ হবে না বলে মত দেন ফাহমিদা খাতুন। সুতরাং, নীতিগতভাবে স্বচ্ছতা ও সমতার দিকটি পুনর্বিবেচনা করা জরুরি।
