ঢাকা   মঙ্গলবার ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

’অপারেশন গিডিওনের রথ’: গাজার পূর্ণ দখলের পথে ইসরায়েল?

’অপারেশন গিডিওনের রথ’: গাজার পূর্ণ দখলের পথে ইসরায়েল?

ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সম্প্রসারিত এই অভিযানের পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে, যার লক্ষ্য হতে পারে গাজা উপত্যকার সম্পূর্ণ দখল এবং ত্রাণ সরবরাহের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ। যদিও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান শুরু হবে না।

রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম 'কান'-এর তথ্যমতে, এই পরিকল্পনা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হবে এবং এতে সময় লাগতে পারে কয়েক মাস। প্রাথমিকভাবে গাজার নির্দিষ্ট এলাকায় অভিযান চালানো হবে। নেতানিয়াহু স্পষ্ট ভাষায় বলেন, এবার আর বাহির থেকে আঘাত করে সরে আসা হবে না—দখল করা এলাকাগুলো ধরে রাখা হবে, গাজার বহু বাসিন্দাকে নিরাপত্তার স্বার্থে সরিয়েও নেওয়া হতে পারে।

ইসরায়েল এরই মধ্যে গাজার এক-তৃতীয়াংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং সেখানে নজরদারি পোস্ট নির্মাণ করেছে। নতুন পরিকল্পনায় পুরো গাজা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, যাতে ত্রাণ হামাসের হাতে না পড়ে—এ জন্য ত্রাণ বিতরণে বেসরকারি সংস্থার ওপর ভরসা রাখার কথাও জানানো হয়েছে।

এই অভিযানের নাম রাখা হয়েছে ‘অপারেশন গিডিওনের রথ’। তবে হামাস জবাবে বলেছে, তারা কোনো আপস করবে না যদি না সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার ও বন্দিমুক্তির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

ইসরায়েলের রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে গাজা পুরোপুরি দখলের পক্ষে শক্ত অবস্থান দেখা যাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ ঘোষণা দিয়েছেন, “আমরা এবার সত্যিই গাজা দখল করতে যাচ্ছি—‘দখল’ শব্দটি নিয়ে আমাদের আর ভয় নেই।” তবে সাধারণ জনমত এখন যুদ্ধ নয়, বরং জিম্মি মুক্তির দিকেই বেশি ঝুঁকছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক আকস্মিক হামলায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে চলমান অভিযানে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, গাজার ২৩ লাখ মানুষের জন্য দুর্ভিক্ষ এখন প্রায় অনিবার্য।

অভিযান বিস্তারের সক্ষমতা ও দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ থাকলেও ইসরায়েল স্পষ্ট করছে—লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবেই।