ঢাকা   মঙ্গলবার ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

পুরনো অভ্যাসে বিদায় জানান সহজ ৩ উপায়ে

পুরনো অভ্যাসে বিদায় জানান সহজ ৩ উপায়ে

বদভ্যাস শুধু ছোটদেরই নয়, বরং প্রাপ্তবয়স্কদের মাঝেও অনেক সময় দেখা যায় নানা ধরণের খারাপ অভ্যাস—যেমন দাঁত কামড়ানো, আঙুল চোষা, অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার, ধূমপান বা মদ্যপানের আসক্তি। সময়ের সঙ্গে এসব তালিকায় যোগ হয় আরও অনেক নতুন অভ্যাস, যা অনেক সময় আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে মনোবিদদের মতে, সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে এসব বদভ্যাস ধীরে ধীরে ত্যাগ করা সম্ভব।

বদভ্যাসের পেছনে রয়েছে ডোপামিন নামের এক ধরনের ‘হ্যাপি হরমোন’। ধূমপান, অতিরিক্ত খাওয়া বা দীর্ঘক্ষণ ফোনে স্ক্রল করার সময় এই হরমোন নিঃসরণ হয়, যা মস্তিষ্কে সাময়িক আনন্দ তৈরি করে। কিন্তু যখন কেউ এসব কাজ বন্ধ করতে চান, তখন ডোপামিনের অভাবে মন অস্থির হয়ে পড়ে। ফলে আবার সেই অভ্যাসের দিকেই ঝুঁকে যায় মন।

বদভ্যাস ছাড়ার প্রথম ধাপ হলো—নিজের কারণ বোঝা। কেন আপনি এটি ছাড়তে চান, ছাড়লে কী লাভ হবে—এসব বিষয় নিজের কাছে পরিষ্কার থাকলে সিদ্ধান্তে স্থির থাকা সহজ হয়। এমনকি নিজের কারণগুলো লিখে রাখলে, প্রলোভনের মুহূর্তে তা মনকে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

এরপর গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো—নতুন অভ্যাস গড়ে তোলা। কোনো অভ্যাস হঠাৎ বাদ দিলে মন খারাপ, অস্থিরতা বা অবসাদ দেখা দিতে পারে। তাই বদভ্যাসের জায়গায় ভালো অভ্যাস বসানো জরুরি। গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন একটি অভ্যাস গড়ে তুলতে সময় লাগতে পারে ১৮ থেকে ২৫৪ দিন পর্যন্ত। নিয়মিত চর্চাই এখানে মূল চাবিকাঠি।

সবশেষে রয়েছে—মাইন্ডফুলনেস বা মননশীলতা অনুশীলন। এটি এমন এক মানসিক প্রশিক্ষণ, যা ব্যক্তি‌কে বর্তমান মুহূর্তে মনোযোগী হতে শেখায়। যেমন, খাওয়ার সময় শুধু খাওয়ার ওপর মনোযোগ দেওয়া (মাইন্ডফুল ইটিং)। এভাবে নিজের অভ্যাস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ে এবং বুঝতে সহজ হয়—কোন আচরণটি ক্ষতিকর।

সবচেয়ে বড় কথা, বদভ্যাস ত্যাগ করাকে অসম্ভব ভাবার কিছু নেই। বরং মস্তিষ্কের গঠন বুঝে ধৈর্য, সচেতনতা ও সঠিক চর্চার মাধ্যমে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনা সম্ভব। একবার শুরু করলেই বদলে যেতে পারে জীবন।