ঢাকা   মঙ্গলবার ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

হাঁপানি নাকি সাধারণ কাশি? জেনে নিন লক্ষণ, কারণ ও করণীয়

হাঁপানি নাকি সাধারণ কাশি? জেনে নিন লক্ষণ, কারণ ও করণীয়

আজ বিশ্ব অ্যাজমা দিবস। প্রতিবছরের মতো এবারও মে মাসের প্রথম মঙ্গলবার ‘ওয়ার্ল্ড অ্যাজমা ডে’ পালিত হচ্ছে, যার মূল লক্ষ্য হাঁপানি রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো। ১৯৯৮ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে পালিত এই দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য— ‘ইনহেলার চিকিৎসা সবার নাগালে রাখুন’

অ্যাজমা বা হাঁপানি হলো শ্বাসনালির একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহজনিত রোগ, যা সারা বিশ্বে প্রায় ২৬ কোটি মানুষকে ভোগাচ্ছে এবং প্রতিবছর প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশেই এই রোগে ভুগছেন প্রায় এক কোটি মানুষ। শিশু ও কিশোর বয়সীদের মধ্যে এর প্রকোপ বেশি দেখা গেলেও, গ্রামাঞ্চলে রোগটির বিস্তার শহরের তুলনায় বেশি।

হাঁপানির মূল উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে—শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী কাশি, বুকে বাঁশির মতো শব্দ, বুকে চাপ বা দমবন্ধ ভাব। অনেক সময় অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে এলেই এই উপসর্গগুলো প্রকট আকার ধারণ করে। কারও যদি পরিবারে হাঁপানি বা অ্যালার্জির ইতিহাস থাকে এবং উপরোক্ত উপসর্গগুলো দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এক্স-রে, স্পাইরোমেট্রি, রক্তে অ্যালার্জির মাত্রা পরীক্ষা ইত্যাদির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় সহজ হয়।

হাঁপানির পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে—বাড়ি বা বাইরের ধুলাবালি, ফুলের রেণু, পশুর লোম, ঠান্ডা আবহাওয়া, ভাইরাস সংক্রমণ, ধোঁয়া, কিছু ওষুধ (যেমন ব্যথানাশক), মানসিক চাপ, এমনকি অতিরিক্ত হাসি-কান্নাও সমস্যা বাড়াতে পারে।

চিকিৎসার দিক থেকে হাঁপানিকে পুরোপুরি নিরাময় করা না গেলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ইনহেলার হলো এর সবচেয়ে কার্যকর ও নিরাপদ চিকিৎসা মাধ্যম। ইনহেলারের মাধ্যমে স্টেরয়েড ও ব্রংকোডাইলেটর ওষুধ ব্যবহার করে শ্বাসনালির প্রদাহ ও সংকোচন কমানো যায়। হাঁপানির ওষুধ সাধারণত দুই ধরনের—উপশমকারী (যেমন সালবিউটামল) ও প্রতিরোধকারী (যেমন স্টেরয়েড ইনহেলার, লিউকোট্রিন অ্যান্টাগনিস্ট)।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, রোগীকে এই দীর্ঘমেয়াদি অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে জীবনযাপন করতে শেখাতে হবে—যা "শ্বাসযন্ত্রের পুনর্বাসন" হিসেবে পরিচিত।