ঢাকা   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

"নিরাপদ খাদ্যে বৈষম্য নয়, সবার জন্য নিশ্চিত করতে হবে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা"

সব মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেছেন, "গরিবের জন্য অনিরাপদ আর মধ্যবিত্তের জন্য নিরাপদ খাদ্য—এই বৈষম্য চলতে দেওয়া যাবে না।" শনিবার (১০ মে) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটোরিয়ামে ‘৭ম আন্তর্জাতিক সায়েন্টিফিক কনফারেন্স অন ফুড সেফটি অ্যান্ড হেলথ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় সাধারণত শুধু কৃষিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, কিন্তু মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতও সমান গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত বিশ্বের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সেখানে কৃষির পাশাপাশি মাছ ও প্রাণিসম্পদ খাতকে সমন্বিতভাবে বিবেচনা করা হয়, যা বাংলাদেশেও প্রয়োজন।

খাদ্য ও জনস্বাস্থ্যের সম্পর্ক তুলে ধরে ফরিদা আখতার বলেন, "সচেতন মানুষ রাসায়নিক ও অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত খাদ্যের জন্য বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে প্রস্তুত, কিন্তু দরিদ্র জনগোষ্ঠী সে বিষয়ে জানে না। তাদের সচেতন করতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।"

তিনি আরো বলেন, কৃষিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ও আগাছানাশক ব্যবহারে শুধু গাছপালা নয়, গবাদিপশু ও জলজ সম্পদও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পুকুর-নদীতে জমির বিষাক্ত পদার্থ মিশে মাছের প্রাণহানি ঘটাচ্ছে, এমনকি মাছ ধরার ক্ষেত্রেও বিষ ব্যবহার করা হচ্ছে, যা নিরাপদ খাদ্যের জন্য হুমকি।

আধুনিক কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থার সমালোচনা করে উপদেষ্টা বলেন, “হাইব্রিড সবজি উৎপাদনের কারণে ঋতুভিত্তিক সবজির বৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে। একই ধরনের ফসল বারবার চাষ হলে সেটা মনোকালচারে পরিণত হয়, যা দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সোসাইটি ফর সেফ ফুডের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. খালেদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আলিমুল ইসলাম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, খাদ্য নিরাপদ কর্তৃপক্ষের সদস্য ড. মোহাম্মদ শোয়েব ও বিপিআইসিসির প্রেসিডেন্ট শামসুল আরেফিন খালেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিরডাপের মহাপরিচালক ড. পুত্তে গৌদা চন্দ্র শেখর।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, বিজ্ঞানী, শিক্ষার্থী ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।