ঢাকা   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার সুন্নতি নিয়ম ও করণীয়

মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার সুন্নতি নিয়ম ও করণীয়

কাফন মৃত মুসলমানের প্রতি জীবিতদের একটি ধর্মীয় দায়িত্ব ও সম্মানের প্রতীক। ইসলামে কাফন দেওয়ার জন্য রয়েছে সুস্পষ্ট নিয়ম ও দিকনির্দেশনা। এটি মূলত তিন প্রকার—সুন্নত কাফন, কেফায়া কাফন এবং প্রয়োজনীয় কাফন।

পুরুষের সুন্নত কাফন তিনটি অংশে হয়—ইজার (নিচের কাপড়), কামিজ (উপরের কাপড়) এবং লেফাফা (ঢাকনাবিশেষ কাপড়)। তবে প্রয়োজনের ক্ষেত্রে কেফায়া কাফন অর্থাৎ ইজার ও লেফাফাও গ্রহণযোগ্য। একান্ত জরুরি অবস্থায় শুধুমাত্র সতর ঢাকার পরিমাণ কাপড়েও কাফন দেওয়া যাবে। হাদিস শরিফে সাদা কাপড়কে কাফনের জন্য উত্তম বলা হয়েছে।

নারীদের ক্ষেত্রে সুন্নত কাফন পাঁচটি অংশে হয়—লেফাফা, ইজার, কামিজ, ওড়না ও সিনাবন্দ (বক্ষবন্ধনী)। কেফায়া কাফনের ক্ষেত্রে ইজার, লেফাফা ও ওড়না যথেষ্ট। জরুরি কাফনে প্রয়োজন অনুযায়ী যতটুকু কাপড় পাওয়া যায়, তা দিয়েই কাফন দেওয়া যায়। উত্তম হয় সিনাবন্দ বক্ষ থেকে রান পর্যন্ত হওয়া।

কাফন দেওয়ার পদ্ধতিও সুন্নতের অনুসরণে নির্দিষ্ট।
পুরুষের ক্ষেত্রে, প্রথমে লেফাফা, তারপর ইজার, এরপর কামিজ বিছানো হয়। মৃতদেহকে এই কাপড়ের ওপর রেখে প্রথমে কামিজ, তারপর ইজার, এরপর লেফাফা দিয়ে ডান-বাম দিক থেকে পেঁচিয়ে সুরক্ষিতভাবে মোড়ানো হয়, যাতে কাপড় সরে না যায়।

নারীদের ক্ষেত্রে কাফন দেওয়ার নিয়ম কিছুটা ভিন্ন। প্রথমে বিছানো হয় লেফাফা, তারপর ইজার, এরপর কামিজ। মৃত নারীর চুল দুই ভাগ করে সিনার পাশে রেখে দেওয়া হয়। এরপর মাথার ওপর ওড়না রাখা হয়—যা বাঁধা বা পেঁচানো হয় না। এরপর বাম ও ডান দিক থেকে ইজার পেঁচিয়ে সিনা বরাবর বেঁধে দেওয়া হয় এবং শেষে লেফাফা দিয়ে পুরো শরীর মোড়ানো হয়।

এই নিয়মগুলো জানার মাধ্যমে একজন মুসলিম মৃত্যুর পর আরেক মুসলিম ভাই বা বোনের প্রতি শেষ দায়িত্বটি যথাযথভাবে পালনের সক্ষমতা অর্জন করতে পারেন।