
কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভায় দৌলতগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন দীর্ঘ প্রায় আট বছর ধরে বন্ধ। এই স্টেশনের সঙ্গে লাগোয়া রেলওয়ের জমি ও লুপলাইন দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে স্থায়ী হকার্স মার্কেট, যেখানে রয়েছে ৫২৪টি দোকান। স্টেশন বন্ধ থাকলেও লাকসাম-নোয়াখালী রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে, তবে রেলক্রসিংয়ের লুপলাইনের আর কোনো চিহ্নই অবশিষ্ট নেই।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি পূর্বাঞ্চলীয় রেলের সবচেয়ে বড় দখল। ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী থাকাকালে তাজুল ইসলামের নির্দেশে জলাশয় ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ করা হয় এবং ২০১৬ সালে তিনিই আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন। লাকসাম পৌরসভার তৎকালীন মেয়র ও যুবলীগ নেতা আবুল খায়ের দোকান বিক্রির দায়িত্বে ছিলেন। পরে দোকানগুলো টোকেনের মাধ্যমে বিক্রি করা হয় এবং দৈনিক ভিটিপ্রতি ৫০ টাকা করে খাজনা আদায় করা হচ্ছে।
মার্কেটটি এখন লাকসাম পৌরসভার আওতায় ইজারা দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছর পয়লা বৈশাখ থেকে ইজারা নিয়েছেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রাসেল মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, আগে আওয়ামী লীগের নেতারা খাজনা আদায়ের নামে মানুষকে জুলুম করতেন। এখন তিনি নিয়ম মেনে আদায় করছেন। তবে মার্কেট নির্মাণ ও বিক্রির মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
রেলওয়ে বারবার উচ্ছেদে উদ্যোগ নিলেও রাজনৈতিক চাপ ও প্রশাসনের অনীহার কারণে ব্যর্থ হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের ডিভিশনাল ম্যানেজার জানান, দ্রুত নোটিশ দিয়ে দখলদারদের স্থাপনা সরানোর নির্দেশ দেওয়া হবে, অন্যথায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। লাকসাম পৌর প্রশাসক ইউএনও কাউছার হামিদ জানিয়েছেন, জমিটি রেলের হলেও পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী বাজার ইজারা দেওয়া হয়েছে। রেল চাইলে প্রশাসন সহযোগিতা করবে।