facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

ফার্স্ট রিপাবলিক কিনে নিল জেপি মরগান


০৩ মে ২০২৩ বুধবার, ১১:১৩  এএম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

শেয়ার বিজনেস24.কম


ফার্স্ট রিপাবলিক কিনে নিল জেপি মরগান

মন্দার ঝুঁকিতে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। এর মধ্যেই ধসে পড়ল যুক্তরাষ্ট্রের আরেক বৃহৎ ব্যাংক ফার্স্ট রিপাবলিক। এ নিয়ে দুই মাসে দেশটিতে ধসে পড়া ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াল তিনে। ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ফিন্যান্সিয়াল প্রোটেকশন (ডিএফপিআই) গত রবিবার ব্যাংকটি বন্ধ ঘোষণা করে।

বিনিয়োগ ব্যাংকিং জায়ান্ট জেপি মরগান চেজ সোমবার ব্যাংকটি কিনে নিয়েছে বলে জানা যায়। ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকের সব আমানত জেপি মরগানে স্থানান্তর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে এফডিআইসি।

বর্তমানে ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকের মোট সম্পদের পরিমাণ ২২ হাজার ৯১০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ঋণের পরিমাণ ১৭ হাজার ৩০০ কোটি এবং মোট আমানতের পরিমাণ ১০ হাজার ৩৯০ কোটি ডলার। এখন থেকে এসব সম্পদের মালিকানা জেপি মরগানের।

বিপর্যয়ের আশঙ্কায় গত সপ্তাহে ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকের বিপুলসংখ্যক গ্রাহক ও বিনিয়োগকারী তাদের শেয়ার, বন্ড, পণ্য ও অন্যান্য আর্থিক সম্পদ বিক্রি করে দেন। এতে ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমে যায় প্রায় ৭৫ শতাংশ। বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটি ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি আমানত হারায়। প্রি-মার্কেট ট্রেডিংয়ে ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকের শেয়ার ৩৬ শতাংশ কমেছে। চলতি বছর ব্যাংকটির শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ৯৭ শতাংশ।

এদিকে গত রবিবার ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকের বিক্রির লক্ষ্যে একটি নিলামের আয়োজন করে এফডিআইসি। পিএনসি ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস গ্রুপ ও সিটিজেনস ফিন্যান্সিয়াল গ্রুপ ইনকরপোরেটেডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যাংকটি কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে সর্বোচ্চ নিলাম ডাকের মাধ্যমে ব্যাংকটি কেনার সুযোগ পায় জেপি মরগান। এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আটটি রাজ্যের ৮৪টি অফিস পুনরায় চালু করবে জেপি মরগান।

যুক্তরাষ্ট্রে গত মার্চে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সিলিকন ভ্যালি ও সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকেই ঝুঁকিতে ছিল ফ্রার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক। এ ব্যাংকের পতন ঠেকাতে সে সময় এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি ব্যাংক। জেপি মরগান ও সিটি গ্রুপের নেতৃত্বে ১১টি ব্যাংক ফার্স্ট রিপাবলিককে ৩ হাজার কোটি ডলার আমানতের জোগান দেয়। এরপরও পতন ঠেকানো সম্ভব হয়নি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার আগামী ১ জুন থেকে নগদ অর্থের সংকটে পড়তে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী জানেত ইয়েলেন। এ সমস্যা থেকে উত্তরণে ঋণসীমা বাড়ানো বা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে কংগ্রেসের উদ্দেশে গত সোমবার একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার নিম্নকক্ষ কংগ্রেসের সদস্যদের উদ্দেশে পাঠানো চিঠিতে অর্থমন্ত্রী এ সমস্যা সমাধানে ‘দ্রুত পদক্ষেপ’ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে বর্তমানে ঋণসীমা ৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন থেকে বাড়ানো বা এ সীমা বাতিল করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী ৯ মে এ নিয়ে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।

পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর মতো যুক্তরাষ্ট্রেও ঋণসীমা নির্ধারণ করা আছে। এর বাইরে দেশটির সরকার ঋণ দিতে বা নিতে পারে না। তবে বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের ঋণের পরিমাণ ওই সীমার কাছে চলে এসেছে।

ঋণসীমার কাছে পৌঁছে যাওয়া মানে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কয়েক দিন পর আর কোনো ঋণ নিতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৬০ সাল থেকে ঋণসীমা মোট ৭৮ বার বাড়ানো বা কমানো হয়েছে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি। বাইডেন প্রশাসন ঋণসীমা বাড়ানোর বিষয়টি জানানোর পর রিপাবলিকানরা দাবি করেছেন, বাইডেনের অর্থনেতিক নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং অনেক খাতে ব্যয় সংকোচন করতে হবে।

কিন্তু বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টি রিপাবলিকানদের এমন দাবির তীব্র সমালোচনা করেছে। এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, এ নিয়ে কোনো আলোচনা বা আপস করা হবে না।

সূত্র : বিবিসি ও রয়টার্স

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: