ঢাকা   শনিবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

দুই তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভবিষ্যৎ নিয়ে নিরীক্ষকের শঙ্কা

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:২৭, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

দুই তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভবিষ্যৎ নিয়ে নিরীক্ষকের শঙ্কা

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ খাতের সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং বস্ত্র খাতের সোনারগাঁও টেক্সটাইলস লিমিটেডের ভবিষ্যৎ অস্তিত্ব নিয়ে গুরুতর সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষকরা। ২০২৪–২৫ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানি দুটির টিকে থাকা নিয়ে উদ্বেগের কথা তুলে ধরা হয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষা করেছেন আশরাফ উদ্দিন অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের পার্টনার মোহাম্মদ শিব্বির হোসেন। তাঁর মতে, কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসান প্রায় পরিশোধিত মূলধনের সমান হয়ে গেছে এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ নতুন তহবিল জোগাড়ে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতার পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বড় অঙ্কের কর দাবির মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

নিরীক্ষক আরও জানান, উচ্চ ব্যয় ও সীমিত উৎপাদনের কারণে কোম্পানির উৎপাদন খরচ আয়ের চেয়ে বেশি। পাশাপাশি ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন না করা এবং ডিএসই ও সিডিবিএলের ফি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়াও কোম্পানির ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। আলোচ্য বছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১৮ পয়সা, যা আগের বছরের ৩৫ পয়সা লোকসানের তুলনায় কিছুটা কম। ৩০ জুন কোম্পানির এনএভিপিএস ছিল ৬ টাকা ৮৭ পয়সা, আর ডিএসইতে সর্বশেষ শেয়ারদর ছিল ৯ টাকা ৫০ পয়সা।

অন্যদিকে, সোনারগাঁও টেক্সটাইলস লিমিটেডের হিসাব নিরীক্ষা করেছেন জি কিবরিয়া অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের পার্টনার এ কে গোলাম কিবরিয়া। নিরীক্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসান দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকার বেশি। আলোচ্য অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ঋণাত্মক রিটার্ন হওয়ায় ভবিষ্যতে কোম্পানির টিকে থাকা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

সোনারগাঁও টেক্সটাইলসও ২০২৪–২৫ অর্থবছরে কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। এ সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৮০ পয়সা, যেখানে আগের বছরে শেয়ারপ্রতি ২৭ পয়সা লাভ হয়েছিল। ৩০ জুন কোম্পানির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকা ৩৫ পয়সায়। ডিএসইতে সর্বশেষ শেয়ারদর ছিল ৩২ টাকা ২০ পয়সা, আর গত এক বছরে শেয়ারদরের ওঠানামা হয়েছে ২০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৫২ টাকার মধ্যে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিরীক্ষকদের এমন মন্তব্য বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্ক সংকেত। কোম্পানি দুটির আর্থিক পুনর্গঠন ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা ছাড়া টেকসইভাবে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হতে পারে।