ঢাকা   রোববার ০১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মেয়ের ওপর মা–বাবার হক কী? ইসলামের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা

ধর্ম

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২০:০৫, ৩০ মে ২০২৫

মেয়ের ওপর মা–বাবার হক কী? ইসলামের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা

ইসলামে মা-বাবার প্রতি সদাচরণ এবং খেদমতের নির্দেশ ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য। কোরআন ও হাদিসে বারবার সন্তানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পিতা-মাতার সঙ্গে উত্তম ব্যবহার, দেখভাল ও প্রয়োজনে ব্যয়ভার বহনের জন্য। এক্ষেত্রে মেয়ে সন্তানও ব্যতিক্রম নয়। যদি কোনো মেয়ে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয় আর মা-বাবা অভাবী হন, তাহলে মেয়ের ওপর তাঁদের ভরণ-পোষণ ওয়াজিব হয়ে যায়। এমনকি সচ্ছল ভাইবোন থাকলেও দায়িত্ব কেবল একজনের ওপর নয়, বরং সবার ওপর সমানভাবে বর্তায়।

আল্লাহ তাআলা স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘তোমার রব আদেশ করেছেন, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত কোরো না এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো।’ (সুরা ইসরা : আয়াত ২৩)। আরেক জায়গায় বলা হয়েছে, ‘তোমরা যা কিছু ব্যয় করো, তা পিতা-মাতা ও আত্মীয়-পরিজনের জন্য হওয়া উচিত।’ (সুরা বাকারাহ : আয়াত ২১৫)। এই আয়াত ও হাদিসের আলোকে ফুকাহায়ে কিরাম একমত যে, সন্তান সামর্থ্যবান হলে গরিব মা-বাবার জন্য খরচ করা তার ওপর আবশ্যক।

তবে যদি মেয়ে আর্থিকভাবে অক্ষম হয় বা মা–বাবা নিজের আয়েই চলতে পারেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে ব্যয় করা ফরজ নয়। তবে চেষ্টা থাকা উচিত যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার, কারণ এতে আল্লাহর সন্তুষ্টি রয়েছে। মেয়েরা চাইলে ঘরে বসেই শিক্ষকতা, সেলাই, হস্তশিল্প বা হাঁস-মুরগি পালনের মাধ্যমে আয়ের সুযোগ খুঁজে নিতে পারে। শরিয়তের সীমার মধ্যে থেকে স্বামীর অনুমতিসাপেক্ষে বৈধ উপার্জনের পথও অনুসরণ করা যেতে পারে।

এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—মেয়ে নিজের জাকাত বা সদকা তার মা-বাবাকে দিতে পারবে না। তবে তার স্বামী চাইলে শ্বশুর–শাশুড়িকে তার জাকাত বা সদকা দিতে পারেন। আর স্বামীর অজান্তে তার সম্পদ থেকে মা-বাবাকে দেওয়া ঠিক নয়, বরং স্বামীর সম্মতির সঙ্গে দিলে তাতে কোনো আপত্তি নেই।

সব মিলিয়ে ইসলামের দৃষ্টিতে মেয়ের প্রতি নির্দেশনা তিনটি মূল দিক ঘিরেই—(১) মা–বাবার প্রতি ভালোবাসা ও আদব বজায় রাখা, (২) সামর্থ্য অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা করা এবং (৩) শরিয়তের সীমা মেনে প্রতিটি পদক্ষেপ নেওয়া। এতে সন্তানের ওপর আল্লাহর রহমত যেমন নেমে আসে, তেমনি পারিবারিক সম্পর্কও হয় মজবুত ও সম্মানজনক।