ঢাকা   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঈদের আনন্দে মাংস নয় বিপদের কারণ—খেয়াল রাখুন স্বাস্থ্যেও

স্বাস্থ্য

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ৫ জুন ২০২৫

ঈদের আনন্দে মাংস নয় বিপদের কারণ—খেয়াল রাখুন স্বাস্থ্যেও

পবিত্র ঈদুল আজহা দ্বারপ্রান্তে। কোরবানির ঈদ মানেই উৎসব, আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি, আর প্রতিটি ঘরে ঘরে মাংসের নানা পদ। কিন্তু এই আনন্দ যেন অজান্তেই স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ না হয়ে ওঠে, সে বিষয়ে এখন থেকেই সচেতন থাকা জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গরু বা খাসির মাংস আয়রন, জিংক, প্রোটিন, ভিটামিন বি১২ ও বি৬–এর উৎকৃষ্ট উৎস। তবে অতিরিক্ত ও অপরিকল্পিত ভোজনের কারণে অনেকেই ঈদের সময় পেটের গ্যাস, অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য, এমনকি হৃদ্‌রোগ বা ডায়াবেটিসজনিত জটিলতায় আক্রান্ত হন।

একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির জন্য প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭৫ গ্রাম রান্না করা মাংস যথেষ্ট হলেও, কোরবানির ঈদে সেই পরিমাণ অনেকটাই ছাড়িয়ে যায়। বিশেষ করে চর্বিযুক্ত মাংস কিংবা অতিরিক্ত তেল-ঝালযুক্ত রান্না শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য কিছু সহজ পরামর্শ হলো:

  • মাংস খাওয়ার পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ আনুন।

  • চর্বি বাদ দিয়ে রান্না করুন, কম তেল-মসলায় ঝোল বা সেদ্ধ রান্না বেছে নিন।

  • সবজির সঙ্গে মিশিয়ে খেলে হজমে সহায়ক হবে এবং পরিমাণও কম খাওয়া যাবে।

  • ভাত, পোলাও, পরোটা কম খান—এই খাবারের সঙ্গে অতিরিক্ত শর্করা এড়িয়ে চলুন।

হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগীদের জন্য লাল মাংস কম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তাদের জন্য গ্রিলড বা সেদ্ধ মাংস ভালো এবং প্রতিদিন মাংস না খেয়ে বিরতি দিয়ে খাওয়াই স্বাস্থ্যকর।

মাংস সংরক্ষণেও চাই বাড়তি সতর্কতা। মাংস ভালোভাবে ধুয়ে, পানি ঝরিয়ে ফুড গ্রেড প্যাকেটে দুই ঘণ্টার মধ্যে রেফ্রিজারেট করতে হবে। ফ্রোজেন মাংস ভালোভাবে গরম করে রান্না করা জরুরি। রান্নার আগে ও পরে হাত ধোয়া, ছুরি-কাঁচি জীবাণুমুক্ত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ঈদের সময় অতিরিক্ত রিচ ফুড খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিক ও হজমজনিত সমস্যায় ভোগা স্বাভাবিক। প্রতিকার হিসেবে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা, লেবুপানি, ইসবগুল, টক দই কিংবা জিরা-আদা-ধনিয়া পাতার তৈরি পানীয় গ্রহণ হজমে সাহায্য করে।

সর্বোপরি, আনন্দের ঈদ যেন পরিণত না হয় পেটের সমস্যায় কিংবা ওজন বেড়ে যাওয়ার দুঃখে—সেই চেষ্টাই হোক আমাদের স্বাস্থ্যসচেতনতার মূলমন্ত্র। সবাইকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা—ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।