
শিশুরা খুবই স্পর্শকাতর। এক মুহূর্তের অসাবধানতায় ঘরেই ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। তাই শিশুদের যত্নে সচেতনতা ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপই হতে পারে বিপদের বড় প্রতিকার। অভিভাবকদের উচিত, এমন মুহূর্তে বিচলিত না হয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বুঝে নেওয়া—কীভাবে সামলাবেন পরিস্থিতি।
হঠাৎ অতিরিক্ত কান্না:
শিশু ক্ষুধার কারণে, কিংবা পেট বা কানব্যথার জন্য হঠাৎ কেঁদে ওঠে। ক্ষুধা পেলে কান্না থেমে যায় খাওয়ানোর পর, কিন্তু ব্যথার কান্না হয় একটানা, সুতীব্র এবং দুধ বা খাবারে উপশম হয় না। পেটে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, বা সংক্রমণও এই ধরনের কান্নার কারণ হতে পারে।
পেটব্যথা:
ডায়রিয়া, জিয়ার্ডিয়া, কৃমি ইত্যাদি কারণে পেটে ব্যথা, গ্যাস জমে থাকা বা বমি ভাব দেখা দিতে পারে। শিশুকে কাঁধে নিয়ে হালকা চাপড় দিলে গ্যাস বের হতে পারে। প্রয়োজনে বয়স অনুযায়ী সিমেথিকোন জাতীয় ড্রপ দিতে পারেন।
কানব্যথা:
ঠান্ডা, ইনফেকশন, বা কানে ময়লা জমা থাকলে কানব্যথা হতে পারে। গরম তেল নয়, প্রয়োজনে গরম সেঁক এবং প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়ানো যেতে পারে। নাক বন্ধ থাকলে স্যালাইন ড্রপ দিন, আর গোসলে কানে পানি যেন না যায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
পোকামাকড়ের কামড়:
শিশুর শরীরে লাল চাকা দেখা দিলে খেয়াল করুন, তা পোকামাকড়ের কামড়, খাবার বা পোশাকজনিত এলার্জি কি না। প্রস্রাব-পায়খানার স্থান ভালো করে পরখ করুন। প্রয়োজনে শিশুকে বয়স অনুযায়ী এন্টিহিস্টামিন সিরাপ দিন।
হাত-পা মচকানো:
হঠাৎ হাত বা পা মচকে গেলে হাড় স্থানচ্যুতি বা মাংসপেশি ছিঁড়ে যেতে পারে। তখন বরফ সেঁক ও প্যারাসিটামল দিন, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শিশুর হাত-পা টানাটানি করা যাবে না।
নাক দিয়ে রক্ত পড়া:
নাকে আঘাত বা খোঁচাখুঁচির কারণে রক্ত পড়তে পারে। দুই আঙুলে নাক চেপে ধরা, বরফ সেঁক দেওয়া বা তুলার গুটলি নাকে দেওয়া উপকারী। রক্ত না থামলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শ্বাস বন্ধ রাখা:
কখনো কখনো শিশু কাঁদতে কাঁদতে শ্বাস বন্ধ করে ফেলে, জ্ঞান হারায়, হাত-পা শক্ত হয়ে যায়। ভয়, রাগ বা ব্যথায় এমনটা হতে পারে। শিশুকে মন ভোলানোর চেষ্টা করুন—এটা সাধারণত ক্ষণিকের প্রতিক্রিয়া।
এক কথায়, শিশুর আকস্মিক দুর্ঘটনায় ভয় নয়—জ্ঞান, ধৈর্য ও দ্রুত পদক্ষেপই পারে শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে।