
চুলকানি—এই অস্বস্তিকর অনুভূতির সঙ্গে পরিচিত নয়, এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। এটি এমন এক অনুভব, যা হলে অজান্তেই হাত চলে যায় চুলকাতে। তবে সবার চুলকানির মাত্রা এক নয়। অনেকে সামান্য উত্তেজনায়ও প্রবল চুলকানিতে ভোগেন। চুলকানিকে অনেকেই চর্মরোগ ভাবলেও এটি হতে পারে শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সূচনাবিন্দু। বিশেষ করে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় অনেকের চুলকানির প্রবণতা বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে ‘হিস্টামিন’সহ কিছু নিউরোট্রান্সমিটার এই চুলকানির জন্য দায়ী। চুলকানি মূলত চার ধরনের হয়—চর্মরোগজনিত, স্নায়ুজনিত, মানসিক কারণে এবং মস্তিষ্কজনিত কারণেই এই বিরক্তিকর সমস্যা দেখা দিতে পারে। শুষ্ক ত্বক, প্রসাধনী ব্যবহার, আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন, উলের কাপড় বা খাবারের অ্যালার্জি থেকেও চুলকানি হতে পারে। এমনকি ডিম, দুধ, চিংড়ি কিংবা গরুর মাংসের মতো খাবার এবং ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও চুলকানির কারণ হতে পারে।
চর্মরোগ যেমন স্ক্যাবিস, দাউদ, একজিমা, অ্যালার্জি—এসবই চুলকানির জন্য পরিচিত কারণ। পাশাপাশি কিডনি, লিভার, থাইরয়েড, এমনকি ক্যানসারের মতো জটিল রোগও শুরুতে চুলকানির আকারে লক্ষণ দেখাতে পারে। আমাদের দেশে সাধারণত স্ক্যাবিস, আর্টিকেরিয়া, ফাঙ্গাল সংক্রমণ বা অ্যালার্জিজনিত সমস্যাই চুলকানির মূল কারণ।
চুলকানি হলে অনেকেই নিজে নিজে মলম বা অ্যান্টিহিস্টামিন খাওয়া শুরু করেন, যা রোগ গোপন রাখে এবং চিকিৎসায় বিলম্ব ঘটায়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, চুলকানি যদি দীর্ঘস্থায়ী ও অস্বাভাবিক হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
চুলকানি এড়াতে কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলা জরুরি। যেমন বেশি রোদে না যাওয়া, ঘাম হলে দ্রুত মুছে ফেলা, অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাবার বা প্রসাধনী এড়িয়ে চলা, শুষ্ক ত্বকে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করা এবং প্রয়োজন হলে কৃমিনাশক খাওয়া। চুলকানি হলে অ্যান্টিহিস্টামিন সেবন করা যেতে পারে চিকিৎসকের পরামর্শে, তবে মূলত রোগ নির্ণয় ও নির্দিষ্ট চিকিৎসাই এর দীর্ঘমেয়াদি সমাধান।