
চকচকে প্যাকেট, বড় ব্র্যান্ডের লোগো আর বিদেশি নাম—এই তিনে ভরসা করে অনেকেই প্রসাধনী কিনে থাকেন। কিন্তু বিদেশি নাম থাকলেই যে প্রসাধনী আসল বা ভালো হবে, তা মোটেই নয়। দেশে এখন এমন বহু কারখানা গড়ে উঠেছে, যেখানে নামিদামি বিদেশি ব্র্যান্ডের নামে তৈরি হচ্ছে নকল কসমেটিকস। এসব পণ্য বানাতে ব্যবহার করা হয় নিম্নমানের উপাদান, যা ত্বক ও শরীরের জন্য হতে পারে মারাত্মক ক্ষতির কারণ।
প্রতিদিন সংবাদমাধ্যমে ভেসে আসে নকল প্রসাধনীর সন্ধান। চিকিৎসকদের মতে, এসব পণ্যে থাকা অতিরিক্ত রাসায়নিক সরাসরি রক্তে মিশে লিভার, কিডনি, এমনকি হরমোনের ওপরও ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। এর ফলে দেখা দিতে পারে চর্মরোগ, হজমের সমস্যা, হরমোনজনিত জটিলতা এবং এমনকি বন্ধ্যত্বের মতো সমস্যাও।
তাহলে কীভাবে চেনা যাবে আসল ও নকল প্রসাধনী? চিকিৎসক ও উদ্যোক্তা সানজিদা আলম জানালেন, শুধু বারকোড স্ক্যান করে পণ্যের সত্যতা যাচাই করা যায় না। কারণ নকল পণ্যে বারকোড বসিয়ে দেওয়া খুবই সহজ। তাই কেনার আগে পণ্যের টেক্সচার, পারফরম্যান্স ও প্যাকেজিং সম্পর্কে অনলাইনে জেনে নেওয়া জরুরি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দাম—যে প্রসাধনীর আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য ৩০–৪০ ডলার, তা যদি মাত্র দেড় হাজার টাকায় মেলে, তাহলে সন্দেহ করা একেবারে স্বাভাবিক।
অনলাইন থেকে কেনাকাটার সময় বিক্রেতার রিভিউ, রসিদ, এবং পণ্যের উৎস যাচাই করাও গুরুত্বপূর্ণ। কার্গো বা স্যুটকেসে আনা পণ্যের ক্ষেত্রেও সেলারদের কাছে প্রমাণ থাকার কথা। সন্দেহ হলে সেটি দেখতে চাওয়া উচিত।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি নকল হয় ক্রিম, ফাউন্ডেশন, শ্যাম্পু, লিপস্টিক ও আইলাইনারের মতো প্রসাধনী। তাই এসব পণ্য কেনার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করাই বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখতে হবে, বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য নেওয়া এক ভুল সিদ্ধান্ত আপনার ভিতরের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে বহু গুণ।