ঢাকা   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নিজের কোম্পানিতেই সবার নিচে আদানি, সিইওরাও পান বেশি বেতন!

অর্থ ও বাণিজ্য

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮:৫১, ৮ জুন ২০২৫

নিজের কোম্পানিতেই সবার নিচে আদানি, সিইওরাও পান বেশি বেতন!

বিশ্বজুড়ে আলোচিত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি ২০২৪–২৫ অর্থবছরে মোট ১০ কোটি ৪১ লাখ রুপি বেতন পেয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই পরিমাণ পারিশ্রমিক আদানিকে তাঁর নিজস্ব আদানি গ্রুপের অনেক শীর্ষ নির্বাহীর চেয়েও নিচে নামিয়ে দিয়েছে। এমনকি দেশের অন্যান্য শীর্ষ ব্যবসায়ীদের তুলনায়ও আদানির বেতন তুলনামূলকভাবে কম।

ভারতীয় গণমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড জানায়, আদানি গ্রুপের নয়টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে তিনি বেতন নিয়েছেন মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠান—আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড (এইএল) ও আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন (এপিএসইজেড) থেকে। এইএল থেকে তিনি বেতন হিসেবে পেয়েছেন ২ কোটি ২৬ লাখ রুপি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাবদ ২৮ লাখ রুপি। অন্যদিকে এপিএসইজেড থেকে বেতন পেয়েছেন ১ কোটি ৮০ লাখ রুপি এবং কমিশন বাবদ ৬ কোটি ৭ লাখ রুপি।

আদানির আগের বছরের (২০২৩–২৪) মোট পারিশ্রমিক ছিল ৯ কোটি ২৬ লাখ রুপি। নতুন অর্থবছরে তা কিছুটা বাড়লেও ভারতের অন্যান্য ধনীদের তুলনায় অনেকটাই কম। যেমন, ভারতী এন্টারপ্রাইজেসের চেয়ারম্যান সুনীল মিত্তল পেয়েছেন ৩২ কোটি ২৭ লাখ রুপি, বাজাজ গ্রুপের এমডি রাজীব বাজাজ ৫৩ কোটি ৭৫ লাখ রুপি এবং হিরোমোটোর চেয়ারম্যান পবন মুঞ্জালের আয় ছিল ১০৯ কোটি রুপি। ইনফোসিসের সিইও সলিল এস পারেখ ৮০ কোটি ৬২ লাখ রুপি এবং এলঅ্যান্ডটির চেয়ারম্যান এস এন সুব্রাহ্মনিয়াম পেয়েছেন ৭৬ কোটি ২৫ লাখ রুপি।

অন্যদিকে আদানির নিজের কোম্পানির সিইও-রাও বেতন ও সুবিধায় তাঁকে ছাড়িয়ে গেছেন। যেমন, আদানি এন্টারপ্রাইজেসের সিইও বিনয় প্রকাশ ২০২৪–২৫ অর্থবছরে পেয়েছেন ৬৯ কোটি ৩৪ লাখ রুপি, যার মধ্যে ৪ কোটি বেতন ও ৬৫ কোটি ৩৪ লাখ রুপি প্রণোদনা ও অন্যান্য সুবিধা। আদানি গ্রিন এনার্জির এমডি ভনীত এস জাইন পেয়েছেন ১১ কোটি ২৩ লাখ রুপি এবং গ্রুপের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) জুগেশিন্দর সিংয়ের আয় ১০ কোটি ৪০ লাখ রুপি। এমনকি আদানির ছেলে করণ আদানিও তাঁর অধীনস্থ কোম্পানি এপিএসইজেড থেকে পেয়েছেন ৭ কোটি ৯ লাখ রুপি, আর সেখানকার সিইও অশ্বিনী গুপ্ত পেয়েছেন ১০ কোটি ৩৪ লাখ রুপি।

বেতন কাঠামো বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গৌতম আদানি পারিবারিক মালিকানাধীন বিশাল গ্রুপের কর্ণধার হলেও তিনি নিজে বেশি বেতন না নিয়ে অন্যদের মূল্যায়নে মনোযোগী হয়েছেন। এক্ষেত্রে তাঁকে অনেকে ব্যতিক্রমী উদ্যোক্তা হিসেবে দেখছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, এটি মূলত কর কাঠামো এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির কৌশল হিসেবেও ব্যবহার হতে পারে।