
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় বোরো ধানে ব্যাপক আকারে গাছ ফড়িংয়ের (স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘কারেন্ট পোকা’) আক্রমণে ধানগাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। অনেকে বাধ্য হয়ে আধা-পাকা অবস্থায় ধান কাটতে শুরু করেছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, দূর থেকে দেখলে মনে হয় খেতের ধান পেকে গেছে। আসলে গাছের শিষ ও পাতাগুলো সোনালি হয়ে শুকিয়ে গেছে এবং ধানের ভেতরে দানা নেই। কারেন্ট পোকার আক্রমণের দুই-তিন দিনের মধ্যেই গাছ লালচে হয়ে মরে যাচ্ছে। পোকায় আক্রান্ত বেশিরভাগ গাছেই ধান চিটা হয়ে গেছে। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে কীটনাশক ব্যবহার করেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ফল।
মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের ছবিলাপুর গ্রামে দেখা গেছে, মাঠজুড়ে কিছু ধানগাছ শিষের ভারে নুয়ে আছে, আবার কিছু গাছ পুরোপুরি শুকিয়ে মরে গেছে।
ছবিলাপুরের কৃষক আছাদ মণ্ডল বলেন, “পোকার আক্রমণে ১২-১৫ দিন আগেই ধান নষ্ট হয়ে গেছে। আমার জীবিকা এই জমি। এবার কীভাবে সংসার চলবে বুঝতে পারছি না।”
বংশীবেলতৈল গ্রামের কৃষক তাঁরা মিয়া জানান, “৬ বিঘা জমিতে ধান করেছি। প্রায় সব জমিতেই কারেন্ট পোকা ধরেছে। বারবার কীটনাশক দিয়েও রক্ষা পাইনি।”
জেলার কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, মেলান্দহ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, “কৃষকদের যেটি ‘কারেন্ট পোকা’ বলে মনে হচ্ছে, সেটি আসলে বাদামি গাছ ফড়িং। এই পোকা গাছের নিচের অংশের রস শুষে নেয়, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং গাছ মেরে ফেলে।” তিনি জানান, আক্রান্ত এলাকায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে পাঠানো হবে।
এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের সহযোগিতায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।