ঢাকা   বৃহস্পতিবার ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

“বিড়াল নয়, ডিপথেরিয়ার কারণ মানুষই”

স্বাস্থ্য

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৯:১৫, ৮ মে ২০২৫

“বিড়াল নয়, ডিপথেরিয়ার কারণ মানুষই”

ঘরে পোষ্য প্রাণী রাখা এখন অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনের অংশ। কেউ পাখি, কেউ কুকুর, কেউবা বিড়াল পুষে জীবনে একটু প্রশান্তি খোঁজেন। কিন্তু এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কিছু ভুল ধারণা, যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এর মধ্যে একটি হলো—বিড়ালের পশম মুখে গেলে ডিপথেরিয়া হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই বিশ্বাস সম্পূর্ণ ভুল ও ভিত্তিহীন।

ডিপথেরিয়া একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ, যা মূলত শ্বাসতন্ত্রে আক্রমণ করে এবং করনিব্যাকটেরিয়াম ডিপথেরি নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয়। এই জীবাণু গলায় এক ধরনের টক্সিন তৈরি করে, যা শ্বাসরোধের মতো ভয়াবহ জটিলতা তৈরি করতে পারে। টক্সিন রক্তে মিশে গিয়ে হৃদপিণ্ড, স্নায়ু, এমনকি চোখ ও ত্বককেও আক্রান্ত করতে পারে।

রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে সর্দি, গলা ব্যথা, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, এবং গলায় ধূসর আস্তরণ। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি, ব্যবহৃত জামাকাপড় বা বিছানা থেকেও এই রোগ ছড়াতে পারে। তাই ডিপথেরিয়া প্রতিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা এবং সময়মতো টিকা গ্রহণ। বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচির আওতায় দেওয়া পেন্টাভ্যালেন্ট টিকায় ডিপথেরিয়ার প্রতিষেধক অন্তর্ভুক্ত আছে, যা শিশুকে এই রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে—বিড়াল কি এই রোগের বাহক? উত্তর হলো, না। বিড়াল ডিপথেরিয়ার জীবাণু বহন করে না, এমনকি এর পশম থেকেও এই রোগ ছড়ায় না। কাজেই বিড়ালের সংস্পর্শে এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা নেই।

অতএব, ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি। শিশুরা পোষ্য প্রাণীর সঙ্গে বড় হলে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে সহমর্মিতা, দায়িত্ববোধ ও মানবিক গুণাবলি। তাই অমূলক ভয় থেকে প্রাণী পোষার মতো ইতিবাচক অভ্যাস থেকে সন্তানকে বঞ্চিত করা উচিত নয়।