
ইসলাম ধর্মে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা প্রতিটি নেক কাজ ইবাদত হিসেবে গণ্য হয় না। বরং সেটিকে ইবাদতের মর্যাদা পেতে হলে পূরণ করতে হয় ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। প্রাজ্ঞ আলেমদের মতে, এই শর্তগুলো পূরণ না হলে কোনো নেক কাজ ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে না।
১. শরয়ি প্রমাণ থাকা:
যে কোনো আমল ইবাদত হিসেবে পালনের জন্য কোরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হওয়া আবশ্যক। শরিয়ত দ্বারা প্রমাণিত না হলে তা বিদআতের পর্যায়ে পড়ে। যেমন রাসুল (সা.)-এর জন্মদিনে ঈদ উদযাপন বা মিরাজের রাতকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা শরিয়তসম্মত নয়।
২. শরয়ি প্রকারভুক্ত হওয়া:
ইবাদত শরিয়ত অনুমোদিত প্রকারভুক্ত হতে হবে। যেমন ঘোড়া দিয়ে কোরবানি দেওয়া শরিয়তসম্মত নয়, কারণ তা অনুমোদিত পশুর অন্তর্ভুক্ত নয়।
৩. সংখ্যা ও পরিমাণ ঠিক রাখা:
ইবাদতের পরিমাণ যেমন আল্লাহ ও তাঁর রাসুল নির্ধারণ করেছেন, তেমনটি না রাখলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। যেমন জোহরের নামাজ পাঁচ রাকাত পড়া যাবে না।
৪. শরয়ি পদ্ধতি ঠিক রাখা:
ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলামী শরিয়ত নির্ধারিত পদ্ধতি মেনে চলা আবশ্যক। যেমন নামাজে রুকু-সিজদার সঠিক ক্রম বজায় রাখা জরুরি।
৫. সময় ঠিক রাখা:
ইবাদতের নির্দিষ্ট সময় ঠিক রাখতে হবে। যেমন জোহরের নামাজ সূর্য ঢলার পর পড়তে হবে; আগে পড়লে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
৬. স্থান ঠিক রাখা:
ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে তা পালন করাও শর্ত। যেমন হজ পালনে মিনা, আরাফা, মুজদালিফা এবং কাবা ঘরে নির্দিষ্ট কাজগুলো নির্ধারিত জায়গায় করতে হয়।
আলেমরা বলেন, এই শর্তগুলো মানুষকে ইবাদতে শৃঙ্খলা আনার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য প্রকাশের সুযোগ দেয়। তা না হলে ইবাদত খেয়াল-খুশিমতো কাজের পর্যায়ে চলে যেত এবং তার পবিত্রতা ও বৈশিষ্ট্য নষ্ট হতো।
আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে এই শর্তগুলো মেনে সঠিকভাবে ইবাদত করার তাওফিক দেন। আমিন।