
কুয়েটের প্রতিবাদ আন্দোলনের ঢেউ এবার আছড়ে পড়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়েও। উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে টানা পাঁচদিন ধরে বিক্ষোভে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ‘ছাত্র-শিক্ষক সংহতি সমাবেশ’ ব্যানারে বের হয় বিক্ষোভ মিছিল, যা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক ও ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষকও। আন্দোলনকারীরা উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাঁর ‘স্বৈরাচারী আচরণ’, ‘দুর্নীতি’ ও ‘অপেশাদারিত্বের’ বিরুদ্ধে সরব হন। আন্দোলনের অন্যতম মুখ মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ চাই। না হলে কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁকে বিদায় নিতে বাধ্য করা হবে।”
শিক্ষার্থীরা জানান, এই আন্দোলন দমন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা ও হুমকি দেওয়া হয়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের জেরে ৪২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুরের অভিযোগেও একই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়।
শিক্ষকদের অভিযোগ, উপাচার্য কিছু শিক্ষককে অযৌক্তিকভাবে পদোন্নতি থেকে বিরত রেখেছেন। কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, “এই উপাচার্যের অপেশাদারিত্ব বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে।”
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী এস. এম. ওয়াহিদুর রহমান জানান, “সমস্ত শিক্ষার্থীর সম্মতিতে প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।” বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আশিক আহমেদ বলেন, “উপাচার্য দায়িত্ব পালনের ন্যায্যতা হারিয়েছেন, তাঁকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।”
এর আগে গত নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারিতেও উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমতে জমতে এবার তা বিস্ফোরণের রূপ নিয়েছে। আন্দোলনকারীরা এখন উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।