ঢাকা   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শেয়ার কারসাজিতে সাকিবসহ ১৪ জনকে ২.৫ কোটি টাকা জরিমানা!

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:০৮, ৫ জুন ২০২৫

শেয়ার কারসাজিতে সাকিবসহ ১৪ জনকে ২.৫ কোটি টাকা জরিমানা!

শেয়ারবাজারে কারসাজির অভিযোগে জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ ৯ ব্যক্তি ও ৫ প্রতিষ্ঠানকে মোট ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। মে মাসে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ মেলায় এই শাস্তি দেওয়া হয়। তদন্তে উঠে আসে, অভিযুক্তরা ‘ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স’-এর শেয়ারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে সমন্বিতভাবে কাজ করেছেন।

বিএসইসির তথ্যমতে, একাধিক ব্রোকারেজ হাউস ও বেনিফিশিয়ারি ওনার (বিও) অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ওই ব্যক্তিরা কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করেন, যা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেয়ারের দাম ৪৩ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১৩২ টাকা ৫০ পয়সায়—যা প্রায় ১৯৪ শতাংশ বৃদ্ধি, অথচ কোম্পানির পক্ষ থেকে এ সময় কোনো কার্যকর তথ্য প্রকাশ হয়নি।

দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন—কানিজ আফরোজ (৫৯ লাখ), আবুল খায়ের হিরো (৩৭ লাখ), কাজী সাদিয়া হাসান (১৩ লাখ), আবুল কালাম মাতবর (৩ লাখ), সাকিব আল হাসান (৩ লাখ), হুমায়ুন কবির (৩ লাখ), মো. জাহেদ কামাল (২ লাখ) ও আশফাকুজ্জামান (১ লাখ)। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইশাল কমিউনিকেশন লিমিটেডকে ৮৫ লাখ, মোনার্ক এক্সপ্রেসকে ২২ লাখ, মোনার্ক মার্টকে ১৫ লাখ ও লাভা ইলেক্ট্রোডেস ইন্ডাস্ট্রিজকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

তাছাড়া, আল-আমিন কেমিক্যাল, সোনালী পেপার ও এনআরবিসি ব্যাংককে সতর্ক করেছে বিএসইসি, যাদের বিরুদ্ধে আংশিক সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষণ ও পরামর্শ:
এই ঘটনাটি শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে সেলিব্রেটি ও আলোচিত ব্যক্তিরা যুক্ত থাকায় বিষয়টি আরও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভবিষ্যতে এমন কারসাজি ঠেকাতে শুধু জরিমানা নয়, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সিস্টেমিক সংস্কার জরুরি। বিনিয়োগকারীদের উচিত তথ্য যাচাই করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়া।

বাজারে আস্থা ফেরাতে এ ধরনের তদন্ত কার্যক্রম আরও বাড়ানো দরকার, যাতে সুশাসনের মাধ্যমে সব ধরনের অনিয়ম রোধ করা যায়। বিএসইসি’র কঠোর পদক্ষেপ বাজারের জন্য একটি সতর্কবার্তা এবং স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা।