
গত ২৭ মে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৯৫৭তম কমিশন সভায় দেশের পুঁজিবাজারে বহুল প্রতীক্ষিত চারটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে—বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের মেইনটেন্যান্স ফি ৪৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ, সমন্বিত গ্রাহক হিসাব (সিসিএ) থেকে অর্জিত সুদের ২৫% ইনভেস্টরস প্রটেকশন ফান্ডে জমা দিয়ে অবশিষ্ট অর্থ ব্রোকারদের ব্যবহারের অনুমোদন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে কমোডিটি মার্কেট চালুর সিদ্ধান্ত এবং বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের রাইট শেয়ার অনুমোদন।
এই সিদ্ধান্তগুলোকে স্বাগত জানিয়ে গতকাল বুধবার ডিএসই’র বোর্ডরুমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম ডিবিএ’র সদস্যদের সঙ্গে এক সভায় বিএসইসি’র চেয়ারম্যান, কমিশনার এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান।
পুঁজিবাজার উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীকেও ধন্যবাদ জানান তিনি। সভায় ডিএসই’র পরিচালক মো. শাকিল রিজভী, মিনহাজ মান্নান ইমন, রিচার্ড ডি রোজারিও, ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলামসহ ডিবিএ’র পরিচালক ও ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, “আপনাদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিও ফি হ্রাসসহ চারটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং বাজারে অনুকূল প্রভাব পড়বে।”
তিনি আরও জানান, সরকারের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে—টার্নওভারের উপর অগ্রিম আয়কর ৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫ টাকা করা, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান ১০% নির্ধারণ, ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স সম্পূর্ণ মওকুফ, ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ডিভিডেন্ড ট্যাক্স করমুক্ত রাখা এবং কর্তনকৃত ডিভিডেন্ড ট্যাক্সকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনার অনুরোধ।
ডিএসই চেয়ারম্যান স্বল্পমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ডিবিএ’র সদস্যরা বাজার পরিস্থিতির উত্তরণে যেসব প্রস্তাব দেন তা হলো—ডিএসই বিজনেস ডেভেলপমেন্ট টিম গঠন, মার্কেট কমিউনিকেশন স্ট্রাটেজি প্রণয়ন, তারল্য সংকট নিরসন, ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স সংস্কার, মন্দ আইপিও পরিহার, বিও হিসাব খোলার প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ, নতুন বিনিয়োগকারী আকৃষ্টকরণ, টি+১ ও ডে ট্রেড চালু, সরকারি কোম্পানিকে বাজারে আনা, প্রাইমারি মার্কেটকে গতিশীল করা ও বাজেটে বিশেষ প্রণোদনা সংযোজন।
তিনি জানান, ঈদের পর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি), সম্ভাবনাময় কোম্পানি ও ব্যাংকগুলোর সিইওদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নমেন্ট ট্রেজারি বিল ও বন্ডের প্রাইমারি অকশন স্টক মার্কেটের মাধ্যমে চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
শেষে মমিনুল ইসলাম বলেন, “সরকার পুঁজিবাজার উন্নয়নে আন্তরিক। তাই বিনিয়োগকারীদের হতাশ না হয়ে ভালো শেয়ারে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই এবং বাজারের আস্থা ফেরাতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার অনুরোধ করছি।”