
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের ঘোষণা অনুযায়ী ডিভিডেন্ড প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ২৮ মে বুধবার বিএসইসি ২২টি এমন কোম্পানির সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করে, যারা সময়মতো ডিভিডেন্ড বিতরণে ব্যর্থ হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং এর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
বৈঠকে বিএসইসির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শীর্ষ নির্বাহীরাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় ব্যর্থতার পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করার সুযোগ পেলেও, কমিশন সাফ জানিয়ে দেয়—ডিভিডেন্ড নিয়ে গাফিলতি আর চলবে না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আইনানুগ শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
এদিকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর দিয়েছে কমিশন। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের জন্য বাধ্যতামূলক ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের নিয়ম থাকলেও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এ নিয়ম মানছে না। বিএসইসির পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, ৪৪টি কোম্পানি এই বাধ্যবাধকতা পূরণে ব্যর্থ। এদের প্রত্যেককে চিঠি দিয়ে শেয়ার ধারণ নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে কমিশন।
বিএসইসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, "বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং শেয়ারবাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই আমাদের অগ্রাধিকার। আইন না মানলে কোনো কোম্পানিকেই ছাড় দেওয়া হবে না।" একইসঙ্গে, বাজারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং আইনগত কাঠামো দৃঢ় করা কমিশনের চলমান কৌশলের অংশ বলেও উল্লেখ করা হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, বিএসইসির এমন দ্রুত এবং কড়া অবস্থান বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে খুবই প্রয়োজনীয়। বিনিয়োগকারীরা বহুদিন ধরে ডিভিডেন্ড অনিশ্চয়তা এবং শেয়ার হোল্ডিং নিয়ে অস্পষ্টতার অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। এবার হয়তো বাস্তব পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হলো।