
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এপ্রিল ২০২৫ মাসে এই খাতের ৩০টি কোম্পানির হালনাগাদ শেয়ারহোল্ডিং প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে ১৫টি কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে এবং অপর ১৫টিতে কমেছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নতুন করে নজর দিয়েছেন নাভানা ফার্মা, কেয়া কসমেটিকস, জেএমআই সিরিঞ্জ, বিকন ফার্মা ও রেনেটার দিকে। এ কোম্পানিগুলোর প্রত্যেকটিতে ০.২৯ শতাংশ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ০.৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ বেড়েছে। বিশেষভাবে, নাভানা ফার্মাতে ০.৭৫ শতাংশ এবং কেয়া কসমেটিকসে ০.৪৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাজারে আগ্রহী দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত দেয়।
অন্যদিকে, যেসব কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে এসিআই, ওরিয়ন ইনফিউশন, একমি পেস্টিসাইডস, বেক্সিমকো ফার্মা এবং সিলকো ফার্মা। এর মধ্যে ওরিয়ন ইনফিউশনে সবচেয়ে বেশি, ২.৭৭ শতাংশ বিনিয়োগ কমে গেছে, যা বাজার বিশ্লেষকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।
একই সময় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ধারণেও এসেছে সামান্য পরিবর্তন। দেখা গেছে, যেসব কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগেই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কিছুটা কমেছে। আবার যেসব কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে, সেখানে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশ কিছুটা বেড়েছে—যা থেকে বোঝা যায়, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারীরা ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অনুসরণ করছেন।
এছাড়া, কিছু কোম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগেও সামান্য ওঠানামা দেখা গেছে। যেমন রেনেটাতে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ০.৭৮ শতাংশ, বিপরীতে বেক্সিমকো ফার্মাতে বেড়েছে ০.১৮ শতাংশ।
বিশ্লেষণ ও পরামর্শ:
এই চিত্রপট থেকে বোঝা যায়, ওষুধ ও রসায়ন খাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নির্বাচিত কোম্পানিতে সম্ভাবনার দিক বিবেচনায় পুনর্বিন্যাস করছেন তাদের পোর্টফোলিও। বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা—যে তারা কোম্পানির মৌলিক বিশ্লেষণ ও শেয়ারহোল্ডিং ট্রেন্ড যাচাই করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিলে সম্ভাব্য ঝুঁকি হ্রাস পাবে। বিশেষ করে যেসব কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ উভয় বিনিয়োগকারীর অংশ বেড়েছে, সেগুলো বিনিয়োগযোগ্য তালিকায় বিবেচনায় আসতে পারে।
উপসংহার:
ওষুধ খাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগে এই পরিবর্তন বাজারে সাময়িক মিশ্র সেন্টিমেন্ট তৈরি করলেও, এটি ভবিষ্যতে আরও স্থিতিশীল ও কৌশলগত বিনিয়োগের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীদের এখন প্রয়োজন তথ্যনির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং দীর্ঘমেয়াদি সম্ভাবনার দিকে দৃষ্টি দেওয়া।