ঢাকা   বুধবার ২৮ মে ২০২৫, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

লুটপাটে কাহিল শেয়ারবাজারের ৬ ব্যাংক একীভূত হচ্ছে, নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে সরকার

শেয়ারবাজার

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১০:২০, ২৭ মে ২০২৫

লুটপাটে কাহিল শেয়ারবাজারের ৬ ব্যাংক একীভূত হচ্ছে, নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে সরকার

দীর্ঘদিনের লুটপাট, দুর্নীতি ও অনিয়মে জর্জরিত হয়ে পড়া দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ছয়টি বেসরকারি ব্যাংককে একীভূত করে সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া এসব ব্যাংকের সম্পদ ও আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনা শেষে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, আগামী জুলাইয়ের মধ্যে একীভূতকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, “এই ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে মালিকানা গ্রহণই একমাত্র টেকসই পথ।”

প্রাথমিকভাবে সরকারি মূলধন দিয়ে ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন করা হবে জানিয়ে গভর্নর আরও বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আন্তর্জাতিক কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে যাওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।”

যেসব ব্যাংক একীভূত হচ্ছে:
১. ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
২. সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল)
৩. গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
৪. ইউনিয়ন ব্যাংক
৫. এক্সিম ব্যাংক
৬. ন্যাশনাল ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক সূত্র জানায়, এ ব্যাংকগুলোর অধিকাংশই অতিরিক্ত খেলাপি ঋণ, দুর্নীতিপরায়ণ ঋণ বিতরণ, ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা এবং নিয়ন্ত্রকের নির্দেশনা উপেক্ষাসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একে সময়োপযোগী ও সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।

বিশ্লেষণ ও পরামর্শ:
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের এই পদক্ষেপ আর্থিক খাতকে স্থিতিশীল করার এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। তবে একীভূত ব্যাংকের পুনর্গঠন ও ভবিষ্যত ব্যবস্থাপনায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে এই উদ্যোগও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।

উপসংহার:
বছরের পর বছর অনিয়মে ভুগতে থাকা ছয় ব্যাংক এখন সরকারের হস্তক্ষেপে নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে। এই একীভূতকরণ দেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য নতুন এক পরীক্ষা—যেখানে সফলতা নির্ভর করবে দক্ষ ব্যবস্থাপনা, কঠোর তদারকি ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত আর্থিক সংস্কারের ওপর।