
গ্রীষ্মকাল এলেই বাজার ভরে যায় মিষ্টি ফলের সমারোহে—রসাল আম, টসটসে লিচু, আর ঘ্রাণভরা জাম। সুস্বাদু ও পুষ্টিকর এসব ফল সবার প্রিয় হলেও পরিমিত না খেলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, কিডনি সমস্যা বা উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ফল খাওয়ার পরিমাণ ও সময় জেনে নেওয়া জরুরি।
একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন ১–২টি মাঝারি আম, ৮–১০টি লিচু বা এক বাটি (১০০–১৫০ গ্রাম) জাম খেতে পারেন। তবে এটি বয়স, শারীরিক অবস্থা ও রোগভেদে ভিন্ন হতে পারে।
ডায়াবেটিসে সতর্কতা জরুরি:
ডায়াবেটিস রোগীদের মিষ্টি ফল খাওয়ার আগে রক্তে শর্করার মাত্রা জেনে নেওয়া এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত।
-
আম: দিনে ১–২ টুকরা (৪০–৫০ গ্রাম), সকাল বা খাবারের পরে খেতে ভালো।
-
লিচু: ৩–৪টি, ইনসুলিন ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষভাবে সীমিত।
-
জাম: তুলনামূলক কম চিনিযুক্ত, দিনে ৮–১০টি জাম নিরাপদ।
হৃদ্রোগীদের জন্য উপকারী হলেও মাত্রায় খেতে হবে:
এই ফলগুলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে ভরপুর হলেও অতিরিক্ত খেলে ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়িয়ে দিতে পারে। সুস্থ মানুষের তুলনায় একটু কম পরিমাণে খাওয়াই নিরাপদ।
কিডনি রোগীরা রাখুন সতর্কতা:
পটাশিয়াম নিয়ন্ত্রণ জরুরি কিডনি রোগীদের জন্য।
-
আম ও লিচু: দিনে ১–২ টুকরা যথেষ্ট।
-
জাম: নিরাপদ, ৮–১০টি খাওয়া যেতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপে সহায়ক:
এসব ফলে সোডিয়াম কম, পটাশিয়াম বেশি থাকায় উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য উপকারী, তবে পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।
গর্ভাবস্থায় খেতে পারবেন, তবে সীমায় থাকুন:
-
আম: ১–২ টুকরা
-
লিচু: ৩–৫টি
-
জাম: এক মুঠো
এই সময়ে ফল অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে খাওয়া উচিত।
ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে সাবধান:
যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের মিষ্টি ফল পরিমিতভাবে খেতে হবে।
শেষ কথা—গ্রীষ্মের ফল উপকারী হলেও ‘কম খাওয়া, বারবার খাওয়া’ নীতিতে চলাই ভালো। রোগ বা বয়স অনুযায়ী নিজের জন্য সঠিক পরিমাণ জানতে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।