
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার জেরে দক্ষিণ এশিয়ার শেয়ারবাজারে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। গতকাল বুধবার পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে রীতিমতো রক্তপাত হয়েছে, যেখানে কেএসই-১০০ সূচক ৬,৫৬০.৮২ পয়েন্ট বা ৫.৮৯ শতাংশ পতন করেছে। ভারতের লক্ষ্যভিত্তিক সামরিক হামলার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানি অর্থনীতিতে এই ধসনামে।
অন্যদিকে, ভারতের বাজার দিনের শুরুতে কিছুটা ধাক্কা খেলেও দিন শেষে ঘুরে দাঁড়ায়। সেনসেক্স সূচক বেড়ে দাঁড়ায় ৮০,৭৪৬ পয়েন্টে এবং নিফটি সূচক ৩৪.৮০ পয়েন্ট বাড়ে। প্রতিরক্ষা খাতের শেয়ারে ঊর্ধ্বগতি ও বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহ এই পুনরুদ্ধারে বড় ভূমিকা রেখেছে। গত ১৪ দিনে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৪৩,৯৪০ কোটি রুপির শেয়ার কিনেছেন, যা বাজারে আস্থা ফিরিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে বাংলাদেশও এই উত্তেজনার ছায়া থেকে রেহাই পায়নি। বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪৯ পয়েন্ট কমেছে। ডিএসইএস সূচক কমেছে ৪১.৯২ পয়েন্ট ও ডিএস ৩০ সূচক কমেছে ৪০.৩৪ পয়েন্ট।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক ঋণ সংকট এবং ভারতের পাল্টা জবাবের আশঙ্কা দেশটির বাজারকে ধসিয়ে দিয়েছে। মুডিস সতর্ক করে বলেছে, উত্তেজনা বাড়লে পাকিস্তানের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হতে পারে।
অন্যদিকে, ভারতের ব্যবসায়ী মহলও যুদ্ধাবস্থার নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন তারা।
পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরাও জানিয়েছেন, যুদ্ধ চললে শেয়ারবাজার, মুদ্রাবাজার ও ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা থাকায় ওষুধ উৎপাদনে সমস্যার আশঙ্কাও করছেন তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্ভাবনাকে বিপন্ন করছে। যুদ্ধের পরিবর্তে আলোচনার মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন দুই দেশের ব্যবসায়ী নেতারা।