
ইসলামী শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতগুলোর একটি হলো কোরবানি, যা সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলমানের জন্য ওয়াজিব। এই ইবাদত পালনে মূল শর্ত হলো নির্দিষ্ট বয়স ও বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সুস্থ, হালাল গৃহপালিত পশু জবাই করা। তাই কোরবানির পশু কেনার সময় শরিয়ত নির্ধারিত মানদণ্ড সম্পর্কে জানা জরুরি।
কোরবানির জন্য বৈধ পশুর তালিকায় রয়েছে উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। এই পশুগুলোর নর-মাদি উভয়ই কোরবানিযোগ্য হলেও হরিণ, বন্য গরু বা হাঁস-মুরগি জাতীয় পশু-পাখি দ্বারা কোরবানি বৈধ নয়। কোরবানির জন্য পশুর নির্দিষ্ট বয়সও নির্ধারিত—উট হতে হবে কমপক্ষে পাঁচ বছর, গরু-মহিষ দুই বছর এবং ছাগল-ভেড়া-দুম্বা এক বছরের। তবে এক বছরের কম বয়সী ভেড়া বা দুম্বা যদি দেখতে হৃষ্টপুষ্ট ও বড় মনে হয়, তবে তা দ্বারাও কোরবানি করা জায়েজ।
তবে পশুর স্বাস্থ্যের উপরও কোরবানির গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, চার ধরনের ত্রুটিযুক্ত পশু দ্বারা কোরবানি করা যায় না—যার এক চোখ অন্ধ, অতিরিক্ত রুগ্ণ, সম্পূর্ণ খোঁড়া এবং এতটাই দুর্বল যে তার হাড়ে মগজ নেই। এছাড়া দাঁতহীন, খাদ্য চিবাতে অক্ষম কিংবা শিং গোড়া থেকে ভাঙা পশুও কোরবানিযোগ্য নয়। তবে কিছু শিং ভাঙা বা শিং না ওঠা, অর্ধেক কান বা লেজ কাটা পশুর কোরবানি জায়েজ হতে পারে।
কানের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা জরুরি। যদি অর্ধেকের বেশি কান বা লেজ কাটা হয়, তবে সেই পশু দ্বারা কোরবানি বৈধ নয়। কিন্তু যদি জন্মগতভাবে ছোট কান থাকে, তবে তা সমস্যা নয়। রাসুল (সা.) কোরবানির পশুর চোখ, কান ভালো করে পরীক্ষা করে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
সুতরাং, কোরবানির পশু নির্বাচনের সময় শুধুমাত্র বাহ্যিক আকর্ষণ নয়, শরিয়তের বিধানও মাথায় রাখা জরুরি। আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে গ্রহণযোগ্য, উত্তম পশু দ্বারা কোরবানি করার তাওফিক দান করেন।