ঢাকা   রোববার ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

উট কোরবানিতে বিশেষ সুন্নত—জেনে নিন ইসলামের নির্দেশনা ও পদ্ধতি

ধর্ম

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২৬, ২ জুন ২০২৫

উট কোরবানিতে বিশেষ সুন্নত—জেনে নিন ইসলামের নির্দেশনা ও পদ্ধতি

কোরবানির পশুর তালিকায় উট একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রাণী। সামর্থ্যবানদের অনেকেই এই বিশালাকৃতির পশু দিয়ে কোরবানি করে থাকেন। তবে অনেকেরই জানা নেই, উট কোরবানির রয়েছে বিশেষ সুন্নত পদ্ধতি, যা অন্যান্য পশুর মতো নয়। ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে উটকে দাঁড় করিয়ে ‘নহর’ করাই সুন্নত।

নবী করিম (সা.) নিজ হাতে উট নহর করেছেন বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। হজের সময় নবীজি (সা.) ও হজরত আলী (রা.) মিলে মোট একশটি কোরবানি করেছিলেন, যার মধ্যে ৬৩টি নিজ হাতে নহর করেছিলেন নবীজি (সা.)। এমনকি আবু জাহেলের একটি উটকেও কোরবানি করা হয়েছিল, যার নাকে রূপার লাগাম ছিল। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩০৭৬)

উটকে বসিয়ে জবাই করা সুন্নতসম্মত নয়। হাদিসে ইবনে উমার (রা.) একজনের উট বসিয়ে জবাই করার চেষ্টায় বাধা দিয়ে বলেন, “এটিকে দাঁড় করাও এবং বেঁধে জবাই করো, এটাই মুহাম্মদ (সা.)-এর সুন্নত।” (আবু দাউদ, হাদিস: ১৭৬৮)

পবিত্র কোরআনেও মহান আল্লাহ উটকে আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করে দাঁড়ানো অবস্থায় জবাই করার নির্দেশ দিয়েছেন। সুরা হজের ৩৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান অবস্থায় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো এবং তা কাত হয়ে পড়লে খাও ও দান করো।”

উট নহরের সুন্নত পদ্ধতিটি হলো: প্রথমে উটকে দাঁড় করিয়ে সামনের বাঁ পা বাঁধতে হবে, এরপর ধারালো ছুরি দিয়ে গলার নিচে সিনার কাছে একবারে আঘাত করে রগ কেটে দিতে হবে। এতে রক্ত ঝরতে থাকবে এবং উট বাঁ দিকে পড়ে যাবে। এরপর নড়াচড়া থেমে গেলে অন্যান্য পশুর মতো বাকি কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

তবে কেউ যদি নহরের পদ্ধতি না জানেন, কিংবা কোনো কারণে জবাই করতে বাধ্য হন, তাহলেও কোরবানি আদায় হয়ে যাবে। নহরের পর উট কিছুক্ষণ লাফাতে ও চিৎকার করতে পারে—এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

এই বিশেষ সুন্নত ও পদ্ধতি জানলে উট কোরবানিকে আরও সঠিকভাবে পালন করা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।