ঢাকা   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চাকরির বাজারে বড় পরিবর্তন আনবে এআই

চাকরির বাজারে বড় পরিবর্তন আনবে এআই

গুগল ডিপমাইন্ডের সিইও ডেমিস হাসাবিস বলেছেন, আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি চাকরির বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে। তার মতে, কিছু প্রচলিত চাকরি হারিয়ে যাবে, তবে সৃষ্টি হবে একদম নতুন ধরনের পেশা। এ কারণে কিশোর-কিশোরীদের এখন থেকেই এআই শেখা শুরু করা উচিত। যারা প্রযুক্তিকে বুঝে এবং তা ব্যবহার করতে জানে, ভবিষ্যতে তারাই এগিয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, যুগে যুগে প্রযুক্তি মানুষের জীবনে বড় পরিবর্তন এনেছে। যেমন ইন্টারনেট বদলে দিয়েছে ৮০ ও ৯০-এর দশকের মানুষের জীবনধারা। এরপর স্মার্টফোনের মাধ্যমে বদলে গেছে জেনারেশন জেড-এর জীবনযাত্রা। ঠিক তেমনিভাবে, আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। যারা এখন থেকেই এআই শিখবে ও বুঝবে, ভবিষ্যতে তারাই এগিয়ে থাকবে।

২০২২ সালে ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি চালুর পর থেকে বিশ্বজুড়ে এআই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। অনেকেই ভাবছেন, এটি কি মানুষের কাজ কেড়ে নেবে। এ বিষয়ে হাসাবিস বলেন, কিছু চাকরি হারিয়ে যাবে ঠিকই, কিন্তু পাশাপাশি সৃষ্টি হবে নতুন ধরনের কাজ। যেমন একসময় সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার, ইউএক্স ডিজাইনার বা ক্লাউড ইঞ্জিনিয়ার নামক পেশাগুলো ছিল না, কিন্তু এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতেও এমন অনেক পেশার উদ্ভব হবে যা এখনো কল্পনাও করা হয়নি।

হাসাবিস মনে করেন, টিকে থাকার জন্য শুধু সফটওয়্যার ব্যবহার জানলেই চলবে না, বুঝতে হবে প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে। এজন্য তিনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (STEM) বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি শেখার আগ্রহ, মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা, বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা ও সৃজনশীলতা অর্জনের ওপর জোর দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সিলেবাসের বাইরেও সময় বের করে নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী বিষয়ে জানার চেষ্টা করা উচিত। এখন শেখা, ভুল করা ও শেখা থেকে নতুন কিছু তৈরি করার সময়। ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্মে কাজ করা, ফ্রি অনলাইন কোর্স করা এবং বাস্তব সমস্যা নিয়ে চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে দক্ষতা বাড়ানো সম্ভব।

তার মতে, শুধু টেকনিক্যাল জ্ঞান থাকলেই চলবে না, নিজেকে বদলানোর মানসিকতাও থাকতে হবে। মানুষের সবচেয়ে বড় শক্তি তার মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। তাই যারা পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে, তারাই টিকে থাকবে।

সবশেষে তিনি বলেন, এআই এখন শুধু ভবিষ্যতের বিষয় নয়, এটি এখনকার বাস্তবতা। এই সময় যাদের হাতে থাকবে এআই সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতা, ভবিষ্যৎ হবে তাদের হাতেই। তাই এআইকে ভয় না পেয়ে এখন থেকেই শেখা শুরু করাই হবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।