
দীর্ঘ আন্দোলন ও প্রশাসনিক অস্থিরতার পর অবশেষে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) পেল নতুন নেতৃত্ব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের অব্যাহতির ঠিক আট দিনের মাথায় শনিবার (৩ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় আনুষ্ঠানিকভাবে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ১ মে তাঁকে এই পদে নিয়োগ দেয়। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে সব অনুষদের ডিন, হল প্রভোস্ট, দপ্তর প্রধান ও পরিচালকদের সঙ্গে একটি সমন্বয়সভা করেন।
তার আগমনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল ভিন্নরকম উচ্ছ্বাস। শুক্রবার রাতে তিনি কুয়েট ক্যাম্পাসে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে তাকে বরণ করে নেয়।
অন্তর্বর্তী ভিসি অধ্যাপক ড. হযরত আলী চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক। ১৯৮৯ সালে চুয়েটে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের পর তিনি ডিন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর গবেষণাকর্মের পরিমাণও প্রশংসনীয়—দেশ-বিদেশের জার্নালে অর্ধশতাধিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সন্তান অধ্যাপক হযরত আলী ১৯৮৮ সালে কুয়েট (তৎকালীন বিআইটি, খুলনা) থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক শেষ করেন। পরে থাইল্যান্ডের এআইটি থেকে এমএসসি এবং মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি পুত্রা থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
কুয়েটের সাম্প্রতিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এই দায়িত্ব গ্রহণ তাৎপর্যপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি, আন্দোলন, একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ এবং তিন দিনের আমরণ অনশন শেষে অব্যাহতি দেওয়া হয় পূর্ববর্তী ভিসি ও প্রো-ভিসিকে।
বর্তমানে শিক্ষার্থীরা প্রায় দুই মাসের আন্দোলনের জন্য শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে সম্পর্ক পুনঃগঠনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। কুয়েটের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রবিবার (৪ মে) থেকে একাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
এই নতুন নেতৃত্বে কুয়েট কতটা দ্রুত স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে, সেটিই এখন সবার চোখে।