
চলতি বছর পাঠ্যবই বিতরণে বড় ধরনের গাফিলতির পর আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। শিক্ষা বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে এবার জুনের মধ্যেই সব শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। অক্টোবরের মধ্যে প্রাথমিক ও নভেম্বরের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে বই পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
গতবার পাঠ্যবই বিতরণে প্রায় তিন মাস দেরি হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে শিক্ষা বিভাগ। এনসিটিবি জানায়, এমন অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার সময়মতো কাজ শুরু করছে তারা। ইতিমধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠ্যবইয়ের চাহিদা সংগ্রহ করে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মাধ্যমিক পর্যায়ে বইয়ের চাহিদা ২৩ কোটির বেশি হলেও পর্যালোচনায় তা ২২ কোটিতে নেমে এসেছে। এবার চাহিদা নির্ধারণে এনসিটিবি নিজেই সরেজমিনে কাজ করছে, যাতে অপ্রয়োজনীয় বই ছাপা না হয় এবং বাজেট সাশ্রয় হয়।
এনসিটিবি আরও জানায়, বর্তমানে পাঠ্যবই ছাপার বার্ষিক প্রকিউরমেন্ট প্ল্যান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। প্রাথমিকের বই ৫৮৫টি বিতরণ পয়েন্টে অক্টোবরের মধ্যে পৌঁছানোর এবং মাধ্যমিকের বই নভেম্বরের মধ্যে সরবরাহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ২০২৭ সাল থেকে পুরো শিক্ষাক্রম নতুনভাবে পরিমার্জন করে তার ভিত্তিতে পাঠ্যবই প্রণয়নের পরিকল্পনাও করছে এনসিটিবি। প্রথমে ষষ্ঠ শ্রেণিতে এটি চালু হবে, পরে ধাপে ধাপে অন্য শ্রেণিতে বাস্তবায়ন করা হবে। এনসিটিবির চেয়ারম্যানের (রুটিন দায়িত্ব) দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী জানিয়েছেন, এ লক্ষ্যে প্রাথমিক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারের অনুমোদনের পর নেওয়া হবে।
২০১০ সাল থেকে ১ জানুয়ারিতে বই উৎসবের মাধ্যমে নতুন পাঠ্যবই বিতরণ শুরু হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। এবার যেন সেই ভরসা ফিরিয়ে আনা যায়—এমনটাই প্রত্যাশা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের।