
ভারতে অনুপ্রবেশের বিপদ থেকে দেশকে বাঁচাতে উদ্যোগী হচ্ছে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার। গঠন করা হবে ‘জনসংখ্যা মিশন’। আজ শুক্রবার সকালে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া তাঁর ভাষণে লাল কেল্লা থেকে এই ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে দেশের জনবিন্যাস বা “ডেমোগ্রাফি” বদলানোর ষড়যন্ত্র চলেছে। সীমান্তপারের অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের দেশের মানুষদের রুজি রোজগার কেড়ে নিচ্ছে। মা–বোনদের নিশানা করছে। আদিবাসীদের ভুলপথে চালিত করে তাদের জমি জায়গা দখল করছে। এ জিনিস আর বরদাশত করা হবে না।’
এ কথা বলে মোদি জানান, এই ভয়ংকর বিপদের মোকাবিলা করতে এক উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন জনবিন্যাস মিশন বা ডেমোগ্রাফিক মিশন গঠন করা হবে। শুরু করা হবে জনবিন্যাস অভিযান। অনুপ্রবেশকারীদের কবল থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে।
প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তারপর সেখান থেকে ভাষণ দেন। আজ শুক্রবার সেই ভাষণেই তিনি অনুপ্রবেশ সমস্যার ওপর জোর দেন। পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি তাঁর দল বিজেপি ‘বাংলাদেশে থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করা’ মানুষদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা ‘বাংলাভাষী অনুপ্রবেশকারীদের’ বিরুদ্ধে ধরপাকড় অভিযান চালানো হচ্ছে।
কথিত বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা সন্দেহে সাধারণ বাংলাভাষী মানুষদেরও জবরদস্তি সীমান্তে নিয়ে গিয়ে বাংলাদেশ ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। বহু ভারতীয় বাংলাভাষী মুসলিমকেও এই অভিযানের ফলে হয়রান ও হেনস্তা হতে হচ্ছে। জনবিন্যাস কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে এই ‘ষড়যন্ত্র’ রোখার ঘোষণা করে মোদি বোঝালেন, আগামী দিনে এটা হতে চলেছে তাঁর সরকারের রাজনৈতিক হাতিয়ার। বিশেষ করে তাঁর নজরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, যেখানে আগামী বছর বিধানসভার ভোট।
অনুপ্রবেশ ‘নতুন সমস্যার বীজ’ জানিয়ে মোদি বলেন, ‘এটা জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক। এর মধ্য দিয়ে সংঘর্ষের বীজ বোনা হচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীদের সামনে কোনো দেশ মাথা নত করতে পারে না। পূর্বপুরুষেরা আমাদের স্বাধীনতা উপহার দিয়েছেন। অনুপ্রবেশকারীদের রুখে সেই স্বাধীনতা আমরা রক্ষা করব। এই কর্তব্য আমাদেরই পালন করতে হবে। জনবিন্যাস মিশন কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অবশ্য বিস্তারিতভাবে কিছু জানাননি।’