
পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং এটি মুমিনের জন্য আল্লাহর সঙ্গে নিবিড় সংলাপের সুযোগ। তাই কোরআন পাঠের সময় বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণভাবে প্রস্তুত হওয়া জরুরি—যেমন পবিত্রতা অর্জন, কিবলামুখী হওয়া, একাগ্রতা ও বিনয় থাকা।
কোরআন পাঠের অভ্যন্তরীণ প্রভাব
কোরআন পাঠ মুমিনের অন্তরে কম্পন তোলে, গায়ে কাঁটা দেয়, মনকে নরম করে দেয়। আল্লাহ বলেন—“যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করে, তাদের গাত্র রোমাঞ্চিত হয়, অতঃপর তাদের দেহমন বিনম্র হয়ে আল্লাহর স্মরণে ঝুঁকে পড়ে।” (ঝুমার: ২৩)
সাহাবিরা কোরআন পাঠের সময় কাঁদতেন, শিহরিত হতেন। ইমাম সুয়ুতি বলেন—মুমিনের উচিত আয়াত বুঝে ভাবা, দোয়ার আয়াত এলে চাওয়া, শাস্তির আয়াত এলে আশ্রয় চাওয়া এবং নিজের অবস্থা অনুযায়ী অনুশোচনা করা।
মুমিনের প্রতিক্রিয়া ও আচরণ
১. দোয়া করা: রহমতের আয়াত পাঠ করলে আল্লাহর কাছে চাওয়া।
২. আশ্রয় চাওয়া: শাস্তির আয়াত এলে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া।
৩. পুনরাবৃত্তি করা: কোনো আয়াতে মন আটকে গেলে বারবার পড়া।
৪. কান্না করা: তিলাওয়াতের সময় কান্না করা কিংবা অন্তত কান্নার চেষ্টা করা।
৫. আমলের প্রতিজ্ঞা করা: আয়াত বুঝে আমল করার অঙ্গীকার করা।
৬. সিজদা করা: সিজদার আয়াত পড়লে তা সঙ্গে সঙ্গে পালন করা।
৭. সুরে পাঠ করা: আবেগভরা কণ্ঠে হৃদয় থেকে তিলাওয়াত করা।
হাসান বসরি (রহ.) বলতেন—পূর্ববর্তী মুসলিমরা কোরআনকে প্রভুর বার্তা মনে করত। তারা রাতে কোরআন নিয়ে চিন্তা করত, দিনে তা অনুসন্ধান করত। তাই আমাদেরও উচিত হৃদয়ের দরজা খুলে কোরআন পড়া, বোঝা ও জীবনে বাস্তবায়ন করা।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে কোরআনের আলোয় আলোকিত জীবনযাপন করার তাওফিক দিন। আমিন।