
২০২৫ সালের হজ শেষ হওয়ার পর সারাদেশে প্রশংসিত হচ্ছে এবারের হজ ব্যবস্থাপনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যম—সবখানেই ভেসে আসছে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া। সরকারের দায়িত্বশীল তদারকি, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও প্রযুক্তি-নির্ভর উদ্ভাবনের সমন্বয়ে এবারের হজ ব্যবস্থাপনা অন্যরকম এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বাংলাদেশ প্রান্তে হজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। আর সৌদি অংশে হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করে মূল আনুষ্ঠানিকতাগুলো। তবে এবারের হজে দুই দেশের সমন্বয়ে সময় মতো তাঁবু বরাদ্দ, খাবারের চুক্তি, পরিবহন ও বাড়িভাড়া নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
একাধিক বাধ্যবাধকতা ও নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই মিনা ও আরাফায় তাঁবু বরাদ্দ এবং ক্যাটারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে বাংলাদেশ। এছাড়া ভিসা কার্যক্রমও সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এবার নতুন সংযোজন ছিল ‘লাব্বাইক’ অ্যাপ, যার মাধ্যমে হজযাত্রীরা সহজেই লোকেশন, নামাজের সময়সূচি, ফ্লাইট তথ্য এবং মেডিক্যাল সেবা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
সবচেয়ে আলোচিত উদ্যোগ ছিল হজ প্রি-পেইড কার্ড চালু করা, যা নগদ টাকার বিকল্প হিসেবে কাজ করেছে এবং POS মেশিনে লেনদেন সম্ভব করেছে। একইসাথে বিশেষ রোমিং প্যাকেজ চালু করায় হজযাত্রীরা নিজ দেশে ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরেই সৌদি আরব থেকে প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছেন।
বিমানভাড়া কমিয়ে ২৬,৯৮০ টাকা সাশ্রয় সম্ভব হয়েছে সরকারের আলোচনার ফলে। আবার হজ ব্যবস্থাপনার জনবল কমিয়ে ৩৬৬ থেকে ২৯৩ জনে নামিয়ে আনার মাধ্যমে প্রশাসনিক দক্ষতার প্রমাণ রেখেছে সরকার। মক্কা ও মদিনার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হজকর্মী ও মনিটরিং টিম গঠনের পাশাপাশি মিনায় ১৮টি টিম নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করেছে।
অন্যদিকে, লাগেজ ব্যবস্থাপনাতেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। এবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে অধিকাংশ লাগেজ যথাসময়ে হজযাত্রীদের হাতে পৌঁছানো গেছে।
সব মিলিয়ে হজ ব্যবস্থাপনায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত প্রয়াস, জনবল নিয়ন্ত্রণ, প্রযুক্তি ব্যবহারের সৃজনশীলতা এবং বাস্তবতানির্ভর কৌশলের মাধ্যমে একটি ব্যতিক্রমী ও সফল হজ ব্যবস্থাপনার নজির স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে—যা ভবিষ্যতের জন্য এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।