ঢাকা   শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নবী-রাসুলদের পদচিহ্নে হজ: ইতিহাসের আলোয় এক মহাগাথা

ধর্ম

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ২৮ মে ২০২৫

আপডেট: ১৯:৩৯, ২৮ মে ২০২৫

নবী-রাসুলদের পদচিহ্নে হজ: ইতিহাসের আলোয় এক মহাগাথা

ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম হজ শুধু একটি ইবাদতই নয়, এটি স্মৃতি বিজড়িত এক ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক যাত্রা। আরবি “হজ” শব্দের অর্থ—সংকল্প বা দৃঢ় ইচ্ছা। লাখো মানুষের এই মহাসমাবেশে সবার পরনে একই ধরণের কাপড়, কণ্ঠে একই ধ্বনি—“লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক”—এক অনন্য ঐক্যের প্রতীক হয়ে ওঠে।

হজ শুধু আজকের প্রজন্মের নয়, এটি নবী-রাসুলদের যুগেও পালিত হয়েছে। আদম (আ.) থেকে শুরু করে মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত বহু নবী হজ করেছেন। ইতিহাসবিদদের মতে, হুদ (আ.) ও সালেহ (আ.) ব্যতীত প্রায় সব নবীই হজ পালন করেছেন।

আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) জান্নাত থেকে পৃথক স্থানে অবতরণ করার পর আরাফার ময়দানে পুনর্মিলন হয়। সেই কৃতজ্ঞতা স্মরণে আদম (আ.) পদব্রজে ৪০ বার হজ পালন করেন। এভাবেই হজের ঐতিহ্য শুরু হয়।

ইবরাহিম (আ.)-এর মাধ্যমে হজের আনুষ্ঠানিকতা প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি স্ত্রী হাজেরা ও পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে নিয়ে কাবাঘর নির্মাণ করেন। সাফা-মারওয়ার সাঈ, মিনায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, কোরবানি—all হজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে যায় তাদের স্মৃতির সঙ্গে। কোরআনের হজ সুরায় এই স্মৃতি গর্বভরে উচ্চারিত হয়।

মুসা (আ.)-এর সঙ্গে আরও ৭০ জন নবী পশমি কাপড় পরে হজে এসেছিলেন বলে হাদিসে উল্লেখ আছে। রাসুল (সা.) জানিয়েছেন, তাঁরা মসজিদে খায়ফে সালাত আদায় করেছিলেন। মুসা (আ.)-এর চেহারা ও পোশাকের বিবরণও পাওয়া যায়।

সুলায়মান (আ.) হজে এসে প্রতিদিন হাজার হাজার কোরবানি দেন। ঈসা (আ.) হজ বা ওমরাহ করবেন—এমন ভবিষ্যদ্বাণীও রয়েছে সাহিহ হাদিসে।

মুহাম্মদ (সা.) হিজরতের পর একবার ফরজ হজ এবং জীবদ্দশায় চারবার ওমরাহ করেছেন। তাঁর হজ পালন ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, ছিল মানবজাতিকে সুশৃঙ্খলতা, ত্যাগ ও সংহতির এক জীবন্ত পাঠ শেখানো।

হজের এই ইতিহাস আমাদের জানায়—এটি কেবল একটি ব্যক্তিগত ইবাদত নয়, বরং তা নবী-রাসুলদের পদচিহ্ন অনুসরণের মহাসুযোগ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই মহাপথে চলার তাওফিক দিন। আমিন।