ঢাকা   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘বিচার ছাড়া নির্বাচন নয়’—জামায়াত নেতার হুঁশিয়ারি

‘বিচার ছাড়া নির্বাচন নয়’—জামায়াত নেতার হুঁশিয়ারি

“যাঁরা জামায়াত নেতাদের ফাঁসির রায় দিয়ে হত্যা করেছেন, আগে তাদের বিচার করতে হবে—এরপরই হবে নির্বাচন,”—এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

আজ শনিবার কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়ামে জেলা জামায়াত আয়োজিত বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। বলেন, “বিচারের নামে অতীতে অবিচার হয়েছে। সেই জুডিশিয়াল কিলিংয়ের বিচার ছাড়া কোনো সংস্কার বা নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না।”

তিনি অভিযোগ করেন, “২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে যে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে, তা আবার হতে দেওয়া যাবে না। একটি দল বিচার চায় না, সংস্কার চায় না—শুধু নির্বাচন চায়। জামায়াত এ ধরনের কাগুজে ভোটে যাবে না।”

বিচারব্যবস্থার প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে মুজিবুর রহমান বলেন, “আমরা সুবিচারের কিছুটা সুফল পেয়েছি আমাদের নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির মধ্য দিয়ে। কিন্তু যাঁদের রাজনৈতিক রায়ে হত্যা করা হয়েছে, তাদের বিচার না হলে সুশাসন আসবে না।”

বক্তব্যে তিনি জামায়াতের রাষ্ট্রচিন্তার দিকটিও স্পষ্ট করেন। বলেন, “আমরা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। নবীজি (সা.) যেমন রাষ্ট্র কায়েম করেছেন, আমরাও তেমনই একটি ইসলামি রাষ্ট্র গড়তে চাই।”

সম্মেলনে কিশোরগঞ্জ জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনের জন্য জামায়াতের ছয়জন প্রার্থীকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেন মুজিবুর রহমান এবং জনতার উদ্দেশ্যে ভোট প্রার্থনা করেন।

কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন মতিউর রহমান আকন্দ, ছামিউল হক ফারুকী, শফিকুল ইসলাম মাসুদ এবং মাওলানা নাজমুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন কিশোরগঞ্জ জেলা আমির রমজান আলী।

জেলা জামায়াত সূত্রে জানা যায়, এবারই প্রথম খোলা মাঠে কিশোরগঞ্জে দলটির এত বড় কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। সম্মেলনকে ঘিরে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজারো নেতা-কর্মী ব্যানার-ফেস্টুন ও মিছিলসহ যোগ দেন অনুষ্ঠানে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সম্মেলনে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হলেও, কার্যক্রম বন্ধ হয়নি।

সম্মেলনজুড়ে বারবার উচ্চারিত হয়—‘আগে বিচার, পরে নির্বাচন।’