ঢাকা   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাংলাদেশে আগাম বন্যা মোকাবেলায় ৫৫ মিলিয়ন ডলারের ঘাটতি, ডব্লিউএফপির জরুরি প্রস্তুতি

বাংলাদেশে আগাম বন্যা মোকাবেলায় ৫৫ মিলিয়ন ডলারের ঘাটতি, ডব্লিউএফপির জরুরি প্রস্তুতি

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাওয়ায় জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) মাঠে নেমেছে আগাম প্রস্তুতি নিতে। ২০২৫ সালের বন্যা মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল ঘাটতি রয়েছে। তবুও, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য ডব্লিউএফপি সক্রিয়ভাবে সহায়তা শুরু করেছে।

কক্সবাজারের টেকনাফে বন্যার পূর্বাভাস পাওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ডব্লিউএফপি ৬ হাজার ৫০০ পরিবারের কাছে প্রত্যেকে ৫ হাজার টাকা নগদ অর্থ পৌঁছে দিয়েছে। এতে তারা খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা এবং নিজেদের ঘর-বাড়ি ও জীবিকা রক্ষায় প্রস্তুতি নিতে পেরেছেন। উপকারভোগী নুরুল বেগম বলেন, ‘আগের বন্যায় কোনো আর্থিক সহায়তা পাইনি, এবার এই অর্থ দিয়ে পরিবার চালাতে ও ঘর মেরামত করতে পারব।’

ডব্লিউএফপির বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্ক্যালপেলি জানান, জলবায়ুজনিত দুর্যোগের সময়ে দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা জনগোষ্ঠীর ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে। ২০২৫ সালের জন্য চার ধাপের জরুরি প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদানের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আগাম প্রস্তুতি, দুর্যোগের পর খাদ্য সরবরাহ, আর্থিক সহায়তা ও আয়বর্ধক কার্যক্রম।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ৬ মিলিয়নের বেশি দুর্যোগ-প্রবণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্য রেখেছে, তবে তহবিল ঘাটতি থাকায় কার্যক্রম সম্প্রসারণে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, আয়ারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও জাতিসংঘের সহযোগিতায় এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হচ্ছে।

একই সঙ্গে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে ভারি বর্ষণের ফলে বন্যা ও ভূমিধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের জন্য পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার সরবরাহ চালানো হচ্ছে। স্থানীয় স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামের পুষ্টি বিস্কুটের মজুদ পুনরায় পূরণের জন্য জরুরি ভিত্তিতে অতিরিক্ত ২ মিলিয়ন ডলারের তহবিল প্রয়োজন।

আগাম প্রস্তুতির মাধ্যমে বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবিলায় দৃঢ় হচ্ছে, তবে আরও বৃহৎ সহায়তা প্রয়োজন যাতে মানুষের জীবন রক্ষা নিশ্চিত করা যায়।