
নারীদের জীবনে চল্লিশ পেরোনো মানেই যেন নতুন এক শরীরবৃত্তীয় যাত্রা। এই বয়সের পর থেকেই শরীরে হরমোনগত পরিবর্তন শুরু হয়। ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে, দেখা দেয় বাতজনিত ব্যথা, পেশি দুর্বলতা এবং ক্লান্তি। পেট, বাহু ও ঊরুতে জমতে থাকে অবাঞ্ছিত মেদ, যা স্বাভাবিক চলাফেরায়ও ব্যাঘাত ঘটায়।
৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যেই নারীরা রজোনিবৃত্তির (মেনোপজ) অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান, যেখানে দীর্ঘ সময় ঋতুচক্র বন্ধ থাকে। এর সঙ্গে বাড়ে মানসিক অবসাদ, দুশ্চিন্তা, ঘুমের সমস্যা ও খাওয়ার অনীহা। শারীরিক অস্বস্তির পাশাপাশি ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতাও বাড়ে, যা নারীস্বাস্থ্যের জন্য বাড়তি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তবে আশার কথা হচ্ছে, এই সময় নিয়মিত কিছু ব্যায়াম অভ্যাস করলে শরীর থাকবে ফিট, পেশি হবে শক্তিশালী এবং মেদ জমবে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক, চল্লিশোর্ধ্ব নারীদের জন্য কোন ব্যায়ামগুলো সবচেয়ে উপযোগী:
পেলভিক টিল্ট বা ব্রিজ – ম্যাটে শুয়ে কোমর উঁচু করে তুলে ১৬ গুনে নামিয়ে আনুন। দিনে পাঁচ-ছয়বার করলেই হবে। উচ্চতর ভার্সনে এক পা শূন্যে তুলে দশ সেকেন্ড ধরে রাখতে পারেন।
কাফ রেজ – দেয়ালের ধারে দাঁড়িয়ে গোড়ালি ওঠানো-নামানোর ব্যায়াম। হাতে পানিভর্তি বোতল নিয়ে করলে আরও কার্যকর। দিনে ২ সেট করে ১০ বার করলেই যথেষ্ট।
সাইড লায়িং হিপ অ্যাবডাকশন – পাশে শুয়ে ওপরের পা ওঠানো-নামানোর ব্যায়াম। উভয় পাশে ১০ বার করে দিনে ৩-৪ সেট।
স্টেপ আপ্স – সিঁড়ির ধাপে হাতভর্তি বোতল নিয়ে এক পা করে ওঠানামা করুন। ২৪ বার করুন দুই পায়ের সমান ব্যবহার করে।
পুশ আপ – উপুড় হয়ে পা ও হাতের ভর দিয়ে শরীর উঠিয়ে নামান। প্রতি সেটে ২০টি করে তিন সেট করতে পারেন।
এই ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করলে শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরবে, পেশি হবে টোনড এবং হাঁটাচলা সহজ হবে। শুধু সৌন্দর্যই নয়, কর্মক্ষমতাও বাড়বে। তাই চল্লিশ পেরোলেই হতাশ না হয়ে শুরু করুন স্বাস্থ্যকর রুটিন—তাতেই মিলবে নতুন উদ্যম আর আত্মবিশ্বাস।