ঢাকা   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

লম্বা ছুটিতে বিপদ নয়, হোক সচেতনতা—জেনে নিন স্বাস্থ্যসচেতন ছুটির প্রস্তুতি

স্বাস্থ্য

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৫:২৭, ৭ জুন ২০২৫

লম্বা ছুটিতে বিপদ নয়, হোক সচেতনতা—জেনে নিন স্বাস্থ্যসচেতন ছুটির প্রস্তুতি

ঈদের আনন্দের সঙ্গে এবার মিলেছে দীর্ঘ ছুটির উপহার। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সময় কাটানোর এই সুযোগে কেউ যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ি, কেউ বা বেড়াতে দূরে। তবে ছুটির এই আনন্দ যাত্রায় শরীর যেন বিঘ্ন না ঘটায়, সে জন্য দরকার কিছু স্বাস্থ্যগত পূর্বপ্রস্তুতি। কারণ, এ সময় চিকিৎসক বা ওষুধ সহজলভ্য না-ও হতে পারে।

দীর্ঘ ছুটিতে পরিবেশ ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে ঠান্ডা-কাশির প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে শহর থেকে গ্রামে যাওয়া মানুষদের মধ্যে। যাত্রাপথে প্রচুর মানুষের সংস্পর্শে এসে ফ্লু বা ভাইরাস সংক্রমণ ঘটতে পারে। তাছাড়া গরমে খাবার দ্রুত নষ্ট হয়, তাই ডায়রিয়া ও ফুড পয়জনিংয়ের ঝুঁকিও বেশি। গুরুপাক খাবার থেকে বদহজম হওয়া, কোরবানির সময় কাটাছেঁড়া বা আঘাত, এমনকি শিশুদের অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এছাড়া গাড়িতে ভ্রমণের সময় অনেকেই ভোগেন মোশন সিকনেসে—মাথা ঘোরা, বমি ভাব ইত্যাদি।

এই ঝুঁকি মোকাবিলায় আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। ঠান্ডা-কাশির ওষুধ, ইনহেলার (হাঁপানির রোগীদের জন্য), অ্যালার্জির ওষুধ এবং গ্যাসের ওষুধ সঙ্গে রাখতে হবে। খাবারের বিষয়ে থাকতে হবে বাড়তি সচেতনতা—বাসি, অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত বা রাস্তার খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। সঙ্গে ডায়রিয়া প্রতিরোধে স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন।

শিশুদের খাবার ভালোভাবে পরীক্ষা করে দিন, যেন গরমে নষ্ট হয়ে না যায়। তারা যেন আগুন বা পানির কাছে না যায়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন। কোরবানির সময় শিশুদের দূরে রাখাই ভালো।

জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে, তবে জ্বর না কমলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যেকোনো কাটাছেঁড়ার জন্য ফার্স্ট এইড বক্সে গজ, ব্যান্ডেজ, ব্যান্ডএইড ও অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম রাখা উচিত।

অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য এ সময় বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। ভ্রমণ করতে হলে চিকিৎসকের অনুমতি ও পরামর্শ ছাড়া নয়। আর যাঁরা নিয়মিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্য কোনো রোগের ওষুধ খেয়ে থাকেন, তাঁদের উচিত ছুটির সময়ের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ সংগ্রহ করে রাখা।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, প্রাথমিক সতর্কতা নেওয়ার পরও যদি শরীর খারাপ লাগে, তবে নিজে ওষুধ না খেয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। কারণ, ছুটির আনন্দ তখনই পূর্ণ হবে, যখন স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।