ঢাকা   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নবজাতকের জন্ডিস: আতঙ্ক নয়, জরুরি চিকিৎসায় মিলবে সমাধান

নবজাতকের জন্ডিস: আতঙ্ক নয়, জরুরি চিকিৎসায় মিলবে সমাধান

জন্মের পর অনেক শিশুর শরীর ও চোখে হলুদাভ ভাব দেখা যায়, যা নবজাতকের জন্ডিস নামে পরিচিত। অনেক মা–বাবা এতে ভীত হন, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এটি স্বাভাবিক ও চিকিৎসাযোগ্য।

গর্ভকালীন সময়ের রক্তকণিকা ভেঙে বিলিরুবিন নামক একটি রঞ্জক পদার্থ তৈরি হয়। এর মাত্রা শরীরে বেড়ে গেলে ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যায়। প্রায় ৯০ শতাংশ নবজাতকই একধরনের শারীরবৃত্তীয় জন্ডিসে আক্রান্ত হয়, যা কয়েক দিনের মধ্যে আপনাআপনি সেরে যায়। তবে মায়ের রক্তের গ্রুপ যদি নবজাতকের সঙ্গে না মেলে কিংবা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ অথবা লিভারের ত্রুটির কারণে যদি বিলিরুবিন মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, তাহলে তা মারাত্মক জন্ডিস বা প্যাথলজিক্যাল জন্ডিসে পরিণত হতে পারে।

হালকা জন্ডিসে চোখ ও মুখের ত্বক সামান্য হলুদ হয়। কিন্তু মাত্রা বাড়লে বুকে, পেটে, এমনকি হাত-পায়ের তালু পর্যন্ত হলুদ হয়ে যায়। পা বা হাতের তালুতে হলুদ ভাব দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। নিস্তেজতা, খিঁচুনি বা ফ্যাকাশে ভাব থাকলেও চিকিৎসা নিতে হবে দ্রুত।

চিকিৎসার জন্য প্রথমেই বিলিরুবিন ও হিমোগ্লোবিন মাত্রা পরীক্ষা করতে হয়। হালকা শারীরবৃত্তীয় জন্ডিসে সাধারণত ওষুধ লাগে না, শুধু পর্যাপ্ত স্তন্যপান যথেষ্ট। তবে মাত্রা বেশি হলে ফটোথেরাপি দেওয়া হয়। মারাত্মক ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করে ব্লু লাইট ডাবল সারফেস ফটোথেরাপি কিংবা রক্ত বদলের প্রয়োজন হয়।

সবশেষে বলাই যায়, নবজাতকের জন্ডিসে আতঙ্ক নয়, সচেতনতা ও দ্রুত চিকিৎসা হলেই শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব।