ঢাকা   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ফ্যাটি লিভার অবহেলা নয়, সময় থাকতেই সতর্ক হোন

স্বাস্থ্য

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ১২ মে ২০২৫

ফ্যাটি লিভার অবহেলা নয়, সময় থাকতেই সতর্ক হোন

বর্তমানে বিশ্বজুড়েই দ্রুত বাড়ছে ফ্যাটি লিভার রোগীর সংখ্যা। বাংলাদেশেও চিত্র ভয়াবহ—প্রতি চারজনের একজন এ রোগে আক্রান্ত। ১৮ থেকে ৭০ বছর বয়সী মানুষদের পেটের আলট্রাসনোগ্রামে ফ্যাটি লিভারের উপস্থিতি হরহামেশাই ধরা পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেকেই এ সমস্যাকে তেমন গুরুত্ব দেন না, যা পরে সিরোসিস বা ক্যানসারের মতো জটিল রোগে রূপ নিতে পারে।

ফ্যাটি লিভার মূলত দুই ধরনের—অ্যালকোহলিকনন–অ্যালকোহলিক স্ট্যায়াটো হেপাটাইটিস (NASH)। বাংলাদেশে মূলত দ্বিতীয় ধরনের প্রাদুর্ভাব বেশি, যার প্রধান কারণ—অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ, অলস জীবনযাপন, জিনগত প্রবণতা, ইনসুলিন প্রতিরোধ, টাইপ–২ ডায়াবেটিস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা।

বিশেষ করে যাঁরা ভুগছেন মেটাবলিক সিনড্রোমে—যেমন: পেটের চর্বি, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ এলডিএল ও ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কম এইচডিএল—তাঁদের ঝুঁকি বেশি। এই রোগ প্রথমে নিঃশব্দে আসে, পরে ধীরে ধীরে লিভারে প্রদাহ, কোষ ধ্বংস এবং সিরোসিস সৃষ্টি করে।

লক্ষণ ও নির্ণয়:
অনেক সময় এই রোগের তেমন লক্ষণ থাকে না। তবে কিছু ক্ষেত্রে পেটের ডান দিকে অস্বস্তি, ক্লান্তি ও দুর্বলতা দেখা দেয়। আলট্রাসনোগ্রাম বা ফাইব্রোস্ক্যানের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। প্রয়োজনে লিভার বায়োপসিও করা হয়।

চিকিৎসা ও করণীয়:
এ রোগের কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। তবে জীবনযাত্রার পরিবর্তনই হচ্ছে মূল চিকিৎসা। অন্তত ১০% ওজন কমাতে হবে। প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম, কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, অ্যালকোহল ও ধূমপান পরিহার আবশ্যক।

সতর্ক খাদ্যাভ্যাস:

  • ভাত, রুটি, আলু—কম খান

  • শাকসবজি, ফলমূল খান পরিমিত

  • মাছ খান, তবে তৈলাক্ত অংশ বাদ দিয়ে

  • চিনি, ভাজাপোড়া, ফাস্ট ফুড, লাল মাংস—এড়িয়ে চলুন

  • ওটস, যব, সামুদ্রিক মাছ খান পরিমিত


ফ্যাটি লিভারকে ‘সাইলেন্ট কিলার’ বলা হয়, কারণ এটি প্রথমে বোঝা যায় না, কিন্তু পরে বড় বিপদের কারণ হতে পারে। তাই সময় থাকতে অভ্যাস বদলান, চিকিৎসা নিন এবং সুস্থ জীবনযাপনে মনোযোগ দিন।