ঢাকা   বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

অ্যাথলেট ফুট কিন্তু শুধু পায়ের অসুখ নয়

অ্যাথলেট ফুট কিন্তু শুধু পায়ের অসুখ নয়

অনেকে ভাবেন ‘অ্যাথলেট ফুট’ কেবল পায়ের সমস্যা—কিন্তু এই ছত্রাকজনিত রোগ (ফাঙ্গাল ইনফেকশন) শরীরের আরও অনেক অংশে ছড়াতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় টেনিয়া পেডিস, আর লাল রিংয়ের মতো চিহ্নের জন্য একে রিংওয়ার্ম নামেও ডাকা হয়। সাধারণত পায়ের তলা, আঙুলের ফাঁকে, কোমরের ভাঁজে বা মাথার তালুতে এ সংক্রমণ দেখা দেয়।

এই রোগটি ছোঁয়াচে এবং আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে সহজেই অন্যদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষত যাঁদের ডায়াবেটিস রয়েছে, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম কিংবা স্থূলতার সমস্যা আছে, তাঁদের মধ্যে অ্যাথলেট ফুটের আশঙ্কা বেশি। যেহেতু খেলোয়াড়দের মধ্যে এই সংক্রমণ বেশি দেখা যায়, তাই নামেই আছে 'অ্যাথলেট ফুট'।

গরম ও আর্দ্র পরিবেশে ছত্রাক দ্রুত বিস্তার লাভ করে। বিশেষ করে দীর্ঘ সময় ধরে ভেজা মোজা বা ঘামভেজা জুতা পরলে ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাবলিক শাওয়ার, সুইমিং পুল বা জিমে খালি পায়ে হাঁটাও সংক্রমণের বড় কারণ। এমনকি পরিবারের অন্য কেউ আক্রান্ত থাকলেও খুব সহজে এটি ছড়িয়ে পড়ে।

লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে—পায়ের আঙুলের ফাঁকে ভেজাভাব, ফাটাভাব ও চুলকানি, জ্বালাপোড়া এবং দুর্গন্ধ। শরীরের অন্য অংশে হলে হতে পারে লালচে ফুসকুড়ি বা ফোসকা।

চিকিৎসায় অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম, লোশন, শ্যাম্পু বা প্রয়োজনে ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। চিকিৎসা সাধারণত এক থেকে তিন মাস পর্যন্ত চলতে পারে, তাই ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।

প্রতিরোধে যা করতে হবে—পা সব সময় শুকনো ও পরিষ্কার রাখা, ব্যক্তিগত জিনিস যেমন তোয়ালে, জামাকাপড় বা চিরুনি অন্যের সঙ্গে ভাগ না করা, জিম ম্যাট বা স্পোর্টস সরঞ্জাম ব্যবহারে সাবধানতা, নিয়মিত গোসল ও পরিস্কার পোশাক পরিধান করা। সুইমিংপুল বা লকার রুমে খালি পায়ে না হাঁটা এবং প্রতিদিন মোজা ও অন্তর্বাস বদলানো উচিত। পরিবারের কারো মধ্যে সংক্রমণ থাকলে তাকেও দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে।

অ্যাথলেট ফুটকে অবহেলা না করে সময়মতো প্রতিরোধ ও চিকিৎসাই পারে আপনাকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে।