
প্রত্যেক বছর রমজানে ঐতিহ্যবাহী বাহারি খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেন রাজধানীর চকবাজারের ব্যবসায়ীরা। রোজার মাসে ঢাকাবাসীর কাছে চকবাজার হয়ে উঠে বাহারি ইফতার সামগ্রীর স্বর্গরাজ্য। তাই রোজার মাসে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষের ভিড় জমে চকবাজারে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রমজানের প্রথম দিন শুক্রবার থাকায় আজ ক্রেতাদের ভিড় তুলনামূলক বেশি। তাই বেচা কেনাও হচ্ছে দেদার।
আজ হিজরি ১৪৪৪ সালের রমজান মাসের প্রথম দিন। অন্যদিকে দিনটি জুমার দিন শুক্রবারও। তাই মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে শুক্রবারে প্রথম রোজা হিসেবে দিনটি বেশ মহিমান্বিত। শুক্রবার (২৪ মার্চ) পুরান ঢাকার চকবাজার শাহী জামে মসজিদদের সামনের রাস্তা ঘুরে দেখা যায়, জুমার নামাজের পর থেকে আশপাশের দোকানগুলো খুলতে শুরু করে। দোকানগুলোতে তৈরি করতে দেখা গেছে মুখরোচক নানা সুপরিচিত ঐতিহ্যবাহী খাবার। এ ছাড়া রাস্তার ভেতর দুটি সারি তৈরি করে ভ্রাম্যামাণ দোকান বসানো হয়েছে। ওই মসজিদের রাস্তায় দুটি সারিতে ৪ পাশে ইফতার আইটেমের পসরা বসানো হয়েছে।
মসজিদ রোডের শুরুতে বাম পাশে বসানো হয়েছে খাদ্য অধিদপ্তরের মনিটরিং বুথ। রাস্তার শুরু থেকেই হাজারও মানুষ লাইন দিয়ে ঢুকছে। কোনো দোকানের সামনে এক মুহূর্ত দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। সবাই যেন স্রোতের গতিতে ভেসে চলছে। রাস্তা দিয়ে ঢুকতেই হাতের ডানে-বাঁয়ে রয়েছে ফলের দোকান।
বেশিরভাগ দোকানেই দেখা মিলেছে তরমুজ, কলা, আনারস, পেঁপে, বাঙ্গীর। এরপরে দেখা মিলেছে শাহী দই বড়ার। বাটিতে বাটিতে সাজানো দই বড়ার দাম ১২০ থেকে ২৪০ টাকা। উন্মুক্তভাবে বানানো হচ্ছে বড় বড় শাহী জিলাপি, যার দাম সাড়ে ৩০০ টাকা। এরপরেই দেখা মিলেছে চিকেন বল ২৫ টাকা; শাহী পরটা ৬০-৮০ টাকা; টানা পরটা ৪০ টাকা; চিকেন নাগেট ৭০ টাকা; চিকেন লেগ ৯০ টাকা।
আরো দেখা মিলেছে, খাসির রান ৬০০ টাকা; চিকেন তন্দুরি ১৩০ টাকা; চিকেন কারি ১৩০ টাকা; গরু কারি ১৫০ টাকা; মাঠা ১০০ টাকা কেজি; আস্ত গ্রিল ৬০০ টাকা; বিফ জালি কাবাব ৪০ টাকা; কোয়েল পাখি ১০০ টাকা; ছোট মুরগি ১৫০; বড় মুরগি ৩০০ টাকা; বড় বাপের পোলায় খায় ৮০০ টাকা কেজি।
এ ছাড়া আরো দেখা গেছে, সুতি কাবাব, জালি কাবাব, মুঠি জালি কাবাব, টিকা কাবাব, নার্গিস চাপ, শাহী জিলাপি, বোম্বে জিলাপি, ডিম চপ, রোস্ট, দই বড়া, হালিম, নূরানি লাচ্ছি, পনির, পেস্তা বাদাম শরবত, পরোটা, ছোলা, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, ফালুদাসহ নানা আইটেম।
সময় গড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের ঢল আরো বাড়তে থাকে। ক্রেতারা বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে পছন্দের আইটেম কিনছেন। তাদের ভাষ্য, আসলে এটি ঐতিহ্যবাহী ইফতারের বাজার। তাই এখানে ইফতার কিনতে আসা। বড় বাপের পোলাসহ বেশকিছু আইটেমে ক্রেতাদের আকর্ষণ রয়েছে।
শেয়ার বিজনেস24.কম