ঢাকা   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

যে কারণে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিল দোকান মালিক সমিতি

অর্থ ও বাণিজ্য

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৮:৩১, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

যে কারণে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিল দোকান মালিক সমিতি

ব্যাংকের সুপারভিশন চার্জের নামে কেটে নেওয়া ১ শতাংশ টাকা ফেরৎ না দেওয়া হলে বৃহৎ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এই টাকা ফেরৎ না দিলে মাঠে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ব্যবসায়ীক এই চরম মন্দাবস্থার মধ্যে সিএমএসএমই খাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা করছে। এমনি এক ব্যবসায়ীক দুর্যোগময় মুহুর্তে বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হার ৯ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১০ দশমিক ১০ শতাংশে উন্নীত করে। ইতোমধ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী সুদের হার আরেক দফা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন। উপর্যুপরি বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৯ জুন বি আর পিডি সার্কুলার নং -৯ জারি করে যে সিএমএসএমই ঋণ এবং ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে উল্লেখিত সুদ হারের অতিরিক্ত সর্বোচ্চ ১ শতাংশ সুপারভিশন চার্জ আদায় করা যাবে। উক্ত সুপারভিশন চার্জ বছরে একবার আদায় করা যাবে। বার্ষিক ভিত্তিতে আরোপিত এ সুপারভিশন চার্জের ওপর চক্রবৃদ্ধি হারে কোনো চার্জ বা সুদ আরোপ করা যাবে না। তবে কোনো ঋণ হিসাবে বছরের মধ্যবর্তী সময়ে সমন্বিত করার ক্ষেত্রে ১ শতাংশ হারে আনুপাতিক সময়ের জন্য সুপারভিশন চার্জ আদায় করা যাবে।

তিনি বলেন, ওই সার্কুলারের মাধ্যমে সিএমএসএমই খাত ও ভোক্তা ঋণ সীমার ওপর ১ শতাংশ হারে সুপারভিশন চার্জ কর্তন করা হচ্ছে। উল্লেখ থাকে যে, ৭৫ কোটি টাকা ঋণ সীমা পর্যন্ত সিএমএসএমই খাত ধরা হয়। যার ওপর ১ শতাংশ কর্তন করা হলে ৭৫ লক্ষ টাকা কর্তন করা হয়। এতে করে বিভিন্ন ঋণ গ্রহীতার একাউন্ট থেকে কোটি কোটি টাকা কর্তন করা হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে ব্যবসায়ীদের ঋণ খেলাপি ও ধ্বংসের মুখোমুখি দাড় করানো হবে। যা ব্যবসায়ীদের ওপর মারাত্মক অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করবে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আপনারা জানেন বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বিপদজনক। এতে করে পণ্য মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বেচা বিক্রি নাই বললেই চলে। ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে মারাত্মক মন্দা অবস্থা বিরাজ করছে। এহেন আর্থিক মন্দার সময় অতিরিক্ত ১ শতাংশ সুপারভিশন চার্জ কর্তন এ খাতের ব্যবসায়ীদের ওপর মরার ওপর খাড়ার ঘা।

হেলাল উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর আমরা বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে একটি চিঠি প্রেরণ করেছি। যাতে এই সার্কুলারটি প্রত্যাহার করে কর্তনকৃত টাকা সকল ব্যবসায়ীদের একাউন্টে ফেরত দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানাই। কিন্তু অদ্যাবধি এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে আমরা জানি না। ব্যবসায়ীক দীর্ঘ মেয়াদী মন্দার প্রাক্কালে এ ধরনের সিদ্ধান্ত সিএমএসএমই খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। আমরা অদ্যকার এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উক্ত সার্কুলার প্রত্যাহার করে কর্তনকৃত টাকা আগামী ১৫ অক্টোবর ২০২৩ তারিখের মধ্যে স্ব স্ব একাউন্টে ফেরত দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আমাদের দাবির সমর্থনে আমরা সিএমএসএমই খাতের ব্যবসায়ীরা জীবন জীবিকার স্বার্থে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব জহিরুল হক ভূইয়া, বাংলাদেশ হাউজ এন্ড ফ্লাট অনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাইয়ুম তালুকদাম মনি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ পোশাক প্রস্তুকারক সমিতির সভাপতি, আলাউদ্দিন মানিক প্রমুখ।

শেয়ার বিজনেস24.কম