
‘লিচুর রাজ্য’ খ্যাত দিনাজপুরে জমে উঠেছে বেচাকেনা। এরই মধ্যে বাজারে এসেছে মাদ্রাজি, বেদানা, বোম্বাই ও চায়না-থ্রি জাতের লিচু। বর্তমানে ১০০ লিচু সর্বনিম্ন ৪০০ ও সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। শুরুতেই ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। তবে দাম বেশি হওয়ায় অস্বস্তিতে ক্রেতারা।
চাষিরা বলছেন, দাম ভালো পাচ্ছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দাম অনেক বেশি। ক্রেতারা বলছেন, গতবারের চেয়ে দাম দ্বিগুণের বেশি। এত দাম দিয়ে লিচু কিনে খাওয়া সাধ্যের বাইরে।
জেলার সবচেয়ে বড় লিচুর বাজার বসে শহরের কোতোয়ালি থানার সামনে নিউমার্কেটে। এই মার্কেটের পুরোটাই এখন ভরে উঠেছে লিচুতে। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দোকানগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় থাকে। সবুজ পাতা বিছিয়ে তার ওপর স্তূপ করে বিভিন্ন লিচু সাজিয়ে রেখেছেন চাষি ও বাগানিরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সারি সারি ঝুড়িতে লিচু সাজিয়ে রাখা হয়েছে। একদিকে চলছে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক। অপরদিকে চলছে দর-কষাকষি। বাজারে মাদ্রাজি, বেদানা ও বোম্বাই জাতের লিচু বেশি দেখা গেলেও খুচরা বাজারে অল্প পরিমাণ দেখা মিলেছে চায়না-থ্রি লিচু।
ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারিতে মাদ্রাজি লিচুর হাজার বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৫০০ টাকা। বেদানার হাজার সাত-১০ হাজার, চায়না থ্রি সাত-আট হাজার এবং বোম্বাই ২২০০-২৫০০ টাকা।
নিউমার্কেটে লিচু কিনতে এসেছেন শহরের বাসিন্দা তাফিক শিশির। দাম শুনে কিছুটা বিব্রত হয়ে তিনি বলেন, ‘ছোট আকারের ১০০ বেদানা লিচুর দাম ৫০০-৭০০ টাকা। বড়গুলোর দাম ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা। অন্যান্য লিচুর দাম আরও বেশি। সবমিলিয়ে এই দামে লিচু কেনা আমার সাধ্যের বাইরে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় পাঁচ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান আছে পাঁচ হাজার ৪১৮টি। এর মধ্যে বোম্বাই লিচু তিন হাজার ১৭০ হেক্টর, মাদ্রাজি এক হাজার ১৬৬ হেক্টর, চায়না-থ্রি ৮০২ হেক্টর, বেদানা ২৯৫ দশমিক ৫ হেক্টর, কাঁঠালি ৫৬ হেক্টর ও মোজাফফরপুরী ১ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। পাশাপাশি বসতবাড়ির উঠান, বাগানসহ লিচুগাছ আছে প্রায় সাত লাখ। এবার লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ হাজার ৭৯০ মেট্রিক টন।
শেয়ার বিজনেস24.কম