
লিওনেল মেসি আজও ইন্টার মায়ামির ঘরের মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন। তবে খেলোয়াড় হিসেবে নয়। সিনসিনাটির বিপক্ষে মেসিকে থাকতে হয়েছে দর্শক হিসেবে। গ্যালারিতে বসে দলের ড্র করা দেখতে হয়েছে তাঁকে।
মেসি ও জর্দি আলবা আজ খেলতে পারেননি অল স্টার ম্যাচে না খেলে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ায়। মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) এমন সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন ইন্টার মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাচেরানো। তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, এটি অ্যাওয়ে ম্যাচ হলে এমএলএস কর্তৃপক্ষ একই সিদ্ধান্ত নিতে পারত কি না।
গত ৩০ এপ্রিল থেকে মায়ামির প্রতিটি ম্যাচেই ৯০ মিনিট করে খেলেছেন ৩৮ বছর বয়সী মেসি। গত ১৪ জুন থেকে খেলেছেন ৯ ম্যাচ, এর মধ্যে ৪টি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে। সর্বশেষ গত ২৭ এপ্রিল মায়ামির ম্যাচে মেসিকে দেখা যায়নি। এরপর থেকে ক্লাবের কোনো ম্যাচ মিস করেননি আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি।
এ ছাড়াও অল স্টার ম্যাচে খেলার কথা ছিল মেসির। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খেলেননি। এমএলএসের নিয়ম অনুযায়ী, অল স্টার ম্যাচে লিগ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কেউ অংশ না নিলে পরবর্তী ম্যাচে তাঁকে খেলতে দেওয়া হয় না। সে নিয়মেই মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে মেসিকে। একই কারণে আলবাকেও।
তবে এমন নিয়মে খুবই বিরক্ত মাচেরানো। ঘরের মাঠে আজ সিনসিনাটির সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ের পর এই আর্জেন্টাইন বলেছেন, ‘আমি এখানে লিগের সমালোচনা করতে আসিনি বা নিয়ম বদলাতে চাই না। তবে এই ঘটনা নিয়ে আমার একটা মতামত আছে। আমি এমন সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত না, একদমই না। তবু আমরা মেনে নিয়েছি। তবে আমার একটা প্রশ্ন, আজকের ম্যাচটা যদি অ্যাওয়ে হতো (সিনসিনাটির মাঠে), তাহলেও কি লিও খেলতে পারত না? কারণ, যখন স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক থেকে টাকা আসে, তখন তো কেউ কিছু বলে না, তাই না? আসল বিষয় হলো, আজকের ম্যাচটা ছিল হোমে। এটা আপনাদের বিবেচনায় ছেড়ে দিলাম।’
অল স্টার ম্যাচের আগে এমএলএস কমিশনার ডন গারবার স্বীকার করেছিলেন যে, ইন্টার মায়ামি টানা ম্যাচ খেলে ক্লান্ত। তারা ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে চারটি ম্যাচ খেলেছে এবং আলবা ১৯ জুলাই নিউইয়র্ক রেড বুলসের বিপক্ষে ম্যাচে চোট পান। তবে এসব জানার পরও এই দুজনকে নিষিদ্ধ করে এমএলএস কর্তৃপক্ষ।
এ নিয়ে বেজায় চটেছেন মাচেরানো, ‘আজ একটা কিছু বলা হয়, পরের দিন সম্পূর্ণ উল্টো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটাই আমার কাছে অদ্ভুত লাগে। আমরা সবাই শুনেছি, বলা হয়েছিল মেসি কেন খেলেননি। সেটা বোঝাই যাচ্ছে কারণ, সে অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছে। আমরা কখনোই অন্যভাবে বিষয়টিকে দেখার অনুরোধ করিনি।’
ইন্টার মায়ামির সহ–মালিক হোর্হে মাসের অবস্থানও এই শাস্তির বিপক্ষে। মেসি ও আলবার শাস্তি হওয়ার পরই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এটা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ছিল না। তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়, খেলতে চায়। এ জন্যই তারা এখানে এসেছে; খেলবে এবং জিতবে। প্রদর্শনী ম্যাচে না খেলার জন্য কেন তাদের সরাসরি নিষিদ্ধ করা হবে। এটা নিয়ম হলেও তাদের বোধগম্য নয়।’
আজ ম্যাচ শুরুর আগে মায়ামিতে সদ্য নাম লেখানো রদ্রিগো দি পলকে ক্লাবের পক্ষ থেকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্বকাপজয়ী এই আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডারের সঙ্গে মেসির বোঝাপড়া দারুণ।
দলের নতুন খেলোয়াড়কে নিয়ে মাচেরানো বলেছেন, ‘রদ্রিগো দি পলকে দলে নেওয়া আরেকটি ঐতিহাসিক চুক্তি। সে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, বয়স ৩১, খেলোয়াড়ি জীবনের সেরা সময় পার করছে। এই লিগকে অনেক সময় ছোট করে দেখা হয়। তারপরও ক্লাব বিনিয়োগ করছে, উন্নতির চেষ্টা করছে। আমি আশাবাদী সে আমাদের অনেক সাহায্য করবে। আমরা তার জন্য শুভকামনা জানাই।’
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোরে লিগস কাপের ম্যাচে মেক্সিকোর ক্লাব আতলাসের বিপক্ষে খেলবে ইন্টার মায়ামি।