
নতুন অধিনায়ক আর নতুন আশা নিয়ে মাসের মাঝামাঝি পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। উদ্দেশ্য ছিল টি-টোয়েন্টিতে একটি ভিন্ন চেহারায় নিজেদের মেলে ধরা। কিন্তু সফরের শেষ ম্যাচের আগে এসে সেই স্বপ্ন যেন এখন এক কঠিন বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে—ধবলধোলাই এড়ানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হার, এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটে-বলে ভগ্নদশা—সব মিলিয়ে চিত্রটা বেশ হতাশাজনক। বিশেষ করে ধারাবাহিকতার যে অভাব, সেটি চোখে পড়ার মতো। শুরুতে কেউ ঝোড়ো ইনিংস খেললেও মিডল অর্ডারে তা ধরে রাখার সামর্থ্য দেখা যাচ্ছে না।
তাওহিদ হৃদয় পরপর তিন ইনিংসে (০, ১৭, ৫) ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাটিং অর্ডারে বড় দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। অধিনায়ক লিটন দাসও মিডল অর্ডারের বেসিক ভুলগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে লিটনের সরল স্বীকারোক্তি—"ক্রিকেটে মৌলিক কাজগুলো করতে হয়, আমরা এখন সেটা পারছি না।"
গত ম্যাচে লিটন-হৃদয়ের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির ফলেই রানআউট এবং পরের বলেই হৃদয়ের বাজে শট—সবকিছু যেন এক ধরনের অগোছালো মানসিকতা ও আত্মবিশ্বাসের সংকটের প্রতিফলন। খেলোয়াড়দের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি, প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার চেষ্টা কিংবা শরীরী ভাষাতেও সেই তাগিদ দেখা যাচ্ছে না।
তবে দলের মধ্যে এখনও আশার আলো দেখছেন তরুণ পেসার তানজিম হাসান। দ্বিতীয় ম্যাচে নয় নম্বরে নেমে হাফসেঞ্চুরি করে দলকে কিছুটা সম্মান রক্ষা করা এই ক্রিকেটার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমার সতীর্থদের প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে। তাঁরা প্রমাণিত ক্রিকেটার, হয়তো কিছুটা ছন্দের বাইরে আছেন। আশা করি, শেষ ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবেন।”
তানজিমের এই আত্মবিশ্বাস সত্ত্বেও বাস্তবতা হলো—প্রথম দুই ম্যাচেই রান তাড়ায় ভেঙে পড়েছে ব্যাটিং লাইনআপ। বোলাররা শুরুতে উইকেট নিলেও পরে আর চাপ ধরে রাখতে পারেননি। তার ওপর শরীফুল ইসলামের ইনজুরি শেষ ম্যাচে তাঁকে অনিশ্চিত করে তুলেছে, যা বোলিং বিভাগে আরও সংকট বাড়াতে পারে।
সব মিলিয়ে লাহোরে সিরিজের শেষ ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য কেবল জয় নয়, আত্মমর্যাদা ফেরানোর লড়াইও বটে। আর এই লড়াইয়ে নিজেদের এক নতুন রূপে মেলে ধরতে না পারলে, ধবলধোলাই এড়ানো সত্যিই কঠিন হয়ে পড়বে।