
২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আজ সংসদে বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, আগের মতোই বার্ষিক সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত থাকবে। অথচ চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাস্তবতায় করদাতারা করমুক্ত সীমা বাড়ার প্রত্যাশায় ছিলেন।
বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির জন্য করের স্তর পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বছরে সাড়ে ৩৮ লাখ টাকার বেশি আয়ের ওপর প্রযোজ্য হবে। কর কাঠামো অনুযায়ী, প্রথম সাড়ে তিন লাখ টাকার পরে এক লাখ টাকায় ৫ শতাংশ, পরবর্তী চার লাখ টাকায় ১০ শতাংশ, এরপর ৫ লাখে ১৫ শতাংশ, আরেক ৫ লাখে ২০ শতাংশ, পরবর্তী ২০ লাখ টাকায় ২৫ শতাংশ এবং তার পরের আয় অংশে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধী করদাতাদের জন্য এই সীমা পৌনে পাঁচ লাখ এবং গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৫ লাখ টাকা। প্রতিবন্ধী সন্তানের অভিভাবকদের করমুক্ত আয়সীমায় অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকার ছাড় থাকছে।
আগামী ২০২৬–২৭ অর্থবছর থেকে করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় উন্নীত করার ঘোষণাও বাজেটে দেওয়া হয়েছে।
নতুন করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার টাকা, যা আগে ছিল শহরভেদে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। টিআইএনধারীর সংখ্যা বর্তমানে ১ কোটি ১১ লাখ হলেও রিটার্ন জমা দিয়েছেন মাত্র ৪০ লাখ করদাতা।
এদিকে অর্থনীতির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলা হয়েছে, টানা এক বছর গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে। একই সময়ে মজুরি বাড়লেও তা ৮–৯ শতাংশের মধ্যে থাকায় বাস্তবে মানুষের প্রকৃত ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। এমন প্রেক্ষাপটে করমুক্ত সীমা অপরিবর্তিত রাখাকে অনেকেই সাধারণ নাগরিকদের ওপর চাপ হিসেবে দেখছেন।