
২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত পেট্রোবাংলার জন্য বড় স্বস্তি এনে দিতে পারে। বর্তমানে চড়া দামে আমদানি করে কম দামে বিক্রি করায় প্রতি ইউনিটে লোকসান গুনছে পেট্রোবাংলা। বাজেটে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট তুলে নেওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক ৬ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
পেট্রোবাংলা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল, একই গ্যাসে দুইবার ভ্যাট নেওয়া অনুচিত। একদিকে আমদানি পর্যায়ে ১৫% ভ্যাট ও ২% অগ্রিম কর, অপরদিকে গ্রাহক পর্যায়ে আবার ১৫% ভ্যাট ও ২% উৎসে কর দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি বিতরণ সংস্থাগুলোকে মার্জিন বাবদ অর্থ পরিশোধের সময়ও ৫% কর কাটা হয়। এভাবে একদিকে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়, অন্যদিকে ক্ষতি পুষিয়ে দিতে সরকারকে আবার ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।
পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, বর্তমানে ১৪ ডলারে গড়ে এলএনজি কিনতে হচ্ছে, যা স্থানীয় মুদ্রায় পড়ে ১২২–১২৩ টাকা প্রতি ডলার। বছরে প্রায় ১০০–১০৫টি এলএনজি কার্গো আমদানির পরিকল্পনা থাকায় ভ্যাট প্রত্যাহারে কয়েক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর জন্য উৎসে কর ২% থেকে কমিয়ে ০.৬% করা হয়েছে, যা খরচ কমিয়ে দ্রুত লাভের পথে ফিরতে সহায়ক হবে।
পেট্রোবাংলার পরিচালক (অর্থ) এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, খরচ কমলে এলএনজি আমদানি বাড়বে, ফলে শিল্প খাতে গ্যাস–সংকটও কমে আসবে। ইতিমধ্যে আমদানি বাড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি আশাবাদী, কারিগরি ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে শিগগিরই তিতাস ও বাখরাবাদের মতো কোম্পানিগুলো মুনাফায় ফিরবে।
বর্তমানে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহে ব্যয় হচ্ছে ২৯ টাকা ৩৯ পয়সা, যেখানে বিক্রি হচ্ছে ২২ টাকা ৮৭ পয়সায়। ফলে প্রতি ইউনিটে প্রায় ৭ টাকা লোকসান দিচ্ছে পেট্রোবাংলা। গত তিন অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি নিয়েছে সরকার থেকে। বাজেটের এই প্রস্তাব কার্যকর হলে ভবিষ্যতে এত ভর্তুকির প্রয়োজন নাও হতে পারে বলে মনে করছেন জ্বালানি খাত–সংশ্লিষ্টরা।